উজানের ঢল ও বৃষ্টির কারণে নদ-নদীর পানি বেড়ে গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ৩০ ইউনিয়নের চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের প্রায় দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়। পানিবন্দি হয়ে পড়েন আড়াই লাখ মানুষ। সেই সঙ্গে তলিয়ে যায় বিস্তীর্ণ মাঠের ফসলি জমি। বর্তমানে বন্যার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ স্পষ্ট হচ্ছে। এ সব এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার।
গাইবান্ধা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বন্যার কারণে জেলার চার উপজেলার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের ২৫৪ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এরমধ্যে আউশ ধান, আমন বীজতলা ও অন্যান্য ফসল নষ্ট হয়েছে। এছাড়া পাট, ভুট্টাসহ অন্য জমির আবাদ আংশিক নষ্ট হয়েছে। তবে এ ক্ষতির পরিমাণ দ্বিগুণ হবে বলে জানান স্থানীয় এলাকাবাসী ও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।
ফুলছড়ি উপজেলার কাবিলপুর চরের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আমজাদ হোসেন বলেন, ‘দুই সপ্তাহ ধরে ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে থাকায় পুরোপুরি নষ্ট হয়েছে। তবে কোনও কোনও জমির ফসল আংশিক ক্ষতি হয়েছে।’ রতনপুর চরের কৃষক মইনুল ইসলাম বলেন, ‘বন্যার পানিতে তার পাট ও ভুট্টার ক্ষেত ডুবে যায়। পানি কমলেও পাট, ভুট্টা অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে। দু’চার দিনে সম্পূর্ণ পানি নেমে না গেলে বাকি ফসলও নষ্ট হয়ে যাবে।
ক্ষতিগ্রস্ত এসব কৃষক বলছেন, সরকারিভাবে পুনর্বাসন ও ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ না নিলে শতশত হেক্টর জমি অনাবাদি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। তা না হলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক আ কা মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘বন্যার কারণে জেলার চার উপজেলার ২৫২ হেক্টর জমির ধান, পাট, ভুট্টাসহ বিভিন্ন সবজির জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এ কারণে কিছু জমির ধান ও শাক-সবজি নষ্ট হয়েছে। তবে পাট, ভুট্রার তেমন কোনও ক্ষতি হয়নি। চার উপজেলায় এ বছর পাঁচ হাজার ৮০০ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনার মাধ্যমে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
/এএম