চিত্রকলার সুলতান, এসএম সুলতানের ৯৪তম জন্মদিন পালিত

নড়াইলে সুলতানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে (ছবি-প্রতিনিধি)

শিশুদের ছবি আঁকা উৎসবের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের ৯৪তম জন্মদিন পালিত হয়েছে নড়াইলে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ও নিভৃতচারী এ শিল্পীর জন্মদিন উপলক্ষে সেপ্টেম্বরের ৬ থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত চার দিনব্যাপী সুলতান উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।

দিনটি উদযাপনের নড়াইল শহরের কুড়িগ্রামে শিল্পীর নিজ বাসভবনে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয় শিল্পীর সমাধিতে। এরপর শিশুস্বর্গ মিলনায়তনে আয়োজন করা হয় ছবি আঁকার প্রতিযোগিতা। আলোচনা সভার মাধ্যমে স্মরণ করা হয় শিল্পীর জীবন ও কর্মকে। জেলা প্রশাসন, এসএম সুলতান ফাউন্ডেশন, নড়াইল প্রেসক্লাব, এসএম সুলতান বেঙ্গল আর্ট কলেজসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে কর্মসূচিগুলো পালন করা হয়।

সুলতান ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরী সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ কামরুল আরিফ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, সুলতান আর্ট কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর অশোক কুমার শীল, এসএম সুলতান শিশু চারু ও কারুকলা ফাউন্ডেশনের সভাপতি শেখ হানিফ, জেলা পরিষদের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুর রহমান হিলু।

নড়াইলে শিশুদের ছবি আঁকা উৎসবের মাধ্যমে সুলতানকে স্মরণ (ছবি-প্রতিনিধি)

সুলতানের ৯৪তম জন্মদিন উপলক্ষে এসএম সুলতান শিশু চারু ও কারুকলা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আগামী ৬ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর তিন দিনব্যাপী সুলতান উৎসব অনুষ্ঠিত হবে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সুলতান মঞ্চ চত্বরে। সুলতান ফাউন্ডেশনের আয়োজনে  ৯ সেপ্টেম্বর চিত্রা নদীতে পুরুষ ও নারীদের নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।

নিভৃতচারী এই চিত্রের যাদুকর ১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট নড়াইল শহরের মাছিমদিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মেছের আলী, মা মাজু বিবি। ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। নড়াইলের কুড়িগ্রামের নিজ বাড়ির আঙিনায় তাকে সমাহিত করা হয়। নিজ এলাকায় চিত্রাপাড়ের লালমিয়া নামে পরিচিত এ চিত্রকর ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ম্যান অব দ্য ইয়ার’, নিউইয়র্কের বায়োগ্রাফিক্যাল সেন্টার থেকে ‘ম্যান অব অ্যাচিভমেন্ট’ এবং এশিয়া উইক পত্রিকা থেকে ‘ম্যান অব এশিয়া’ পুরস্কার অর্জন করেন তিনি।

এসএম সুলতান

চিত্রকলার এ সুলতান ১৯৮২ সালে একুশে পদক এবং ১৯৯৩ সালে স্বাধীনতা পদকে পান। ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের রেসিডেন্ট আর্টিস্ট হিসেবে স্বীকৃতি ও ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ সম্মাননা পান তিনি।

সুলতানের স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য শিল্পীর মৃত্যুর পর সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের উদ্যোগে শিল্পীর বাসভবন সংলগ্ন দুই একর ৫৭ শতক জমির ওপর নির্মিত হয়েছে এস এম সুলতান স্মৃতি সংগ্রহশালা। এখানে সংরক্ষণ করা আছে শিল্পীর আঁকা দুর্লভ ছবিসহ তার ব্যবহৃত ব্রাশ, তুলি, টেবিলসহ শিল্পীর ব্যবহার করা বিভিন্ন জিনিসপত্র।

এএইচ/