১শ টাকা চুরির অভিযোগে মাদ্রাসাছাত্রীকে ১৬০ বেত্রাঘাত

বরিশালএকশ টাকা চুরির অভিযোগে আট বছর বয়সী এক শিশু শিক্ষার্থীকে ১৬০ বেত্রাঘাত করা হয়েছে।  এমনকি নির্যাতনের পর তার রাতের খাবারও বন্ধ করে দিয়েছেন মাদ্রসাশিক্ষক। নির্যাতিত ওই শিশুটি বরিশালের গৌরনদী উপজেলা সদরের খাদিজাতুল কোবরা (রা.) মহিলা কওমি মাদ্রাসার ছাত্রী কামরুন নাহার সুমাইয়া। এ অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেন গৌরনদী থানার ওসি মনিরুল ইসলাম।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) এ ঘটনার পর শুক্রবার (১১ আগস্ট) ওই শিশুটিকে উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাটি আমি শুনেছি। এ ঘটনায় এখনও কেউ থানায় অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. নিহার রঞ্জন বৈদ্য বলেন, ‘নির্যাতিত ওই শিশুর শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে। তবে তার ভীতি দূর করার জন্য কাউন্সিলিং প্রয়োজন।’

নির্যাতিত ওই শিশুর মা উপজেলার পশ্চিম শাওড়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী মো. কামাল হোসেন বেপারীর স্ত্রী রেনু বেগম জানান, সাড়ে তিন বছর আগে তাদের একমাত্র শিশু কন্যা কামরুন নাহার সুমাইয়াকে ওই মাদ্রাসায় ভর্তি করেন। মাসিক তিন হাজার টাকা চুক্তিতে মাদ্রাসার আবাসিক হলে রাখা হয়। শুক্রবার সকালে মাদ্রাসার এক ছাত্রী গোপনে তাকে ফোন করে জানায় তিন নারী শিক্ষক সুমাইয়াকে বৃহস্পতিবার রাতে অমানুষিক নির্যাতন করেছেন।

খবর পেয়ে শিশুটির মা সকাল ১০টার দিকে মাদ্রাসার আবাসিক হল থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় সুমাইয়াকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।  

এ সময় মাদ্রাসার সুপার তাকে জানান, অন্য এক ছাত্রীর একশ টাকা চুরির ঘটনায় সুমাইয়াকে শাসন করা হয়েছে। তবে কোন ছাত্রীর টাকা চুরি হয়েছে তা সুপার বলতে জানতে পারেননি।

নির্যাতিত শিশুটির বরাত দিয়ে তার মা রেনু বেগম অভিযোগ করে জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে একশ টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে মাদ্রাসার সুপার সহকারী, সুপার এবং বাংলার শিক্ষক মিলে সুমাইয়ার মুখে গামছা বাঁধেন। এরপর সুপারের নির্দেশে মাদ্রাসার আবাসিক হলে সহকারী সুপার গুণে গুণে তার মেয়েকে ৬০টি ও বাংলার শিক্ষক ১০০টি বেত্রাঘাত করেছেন। এতে তার মেয়ে গুরুতর অসুস্থ হলেও তাকে (সুমাইয়া) রাতের খাবারও দেওয়া হয়নি।

অভিযোগের বিষয়ে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মাদ্রাসার প্রধান সুপার আমার স্ত্রী। টাকা চুরির ঘটনায় ছাত্রী সুমাইয়াকে মাদ্রাসার দুই শিক্ষিকা বেত্রাঘাত করায় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত শিক্ষিকা রোকসানা ও হাফিজাকে মাদ্রাসা থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।

/এসএমএ/