কাজ নেই বৃষ্টিতে, দিনমজুরদের দুর্ভোগ কুমিল্লায়

কাজের অপেক্ষায় দিনমজুররাদিনমজুর আব্দুল গনি গত এক সপ্তাহে কাজ করেছেন মাত্র দুইদিন। সপ্তাহ শেষে শনিবার (১২ আগস্ট) আবার কাজের সন্ধানে বেরিয়েছেন। কিন্তু কাজের কোনও খোঁজ পাচ্ছে না। অথচ বাড়িতে সন্তানরা না খেয়ে আছে সকাল থেকে। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির কারণে আব্দুল গণি দিশেহারা। শুধু আব্দুল গনি নন, অনেক দিনমজুর তার মতো কাজ পাওয়ার অপেক্ষা বসে আছেন কুমিল্লা মহানগরীর কান্দিরপাড় পূবালী চত্বরে।
প্রতিদিন সকাল হলেই এসব দিনমজুররা কাজের আশায় ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে দাঁড়িয়ে থাকেন। এদের মধ্যে দু-একজনের ডাক পড়লেও অন্যরা সারাদিন না খেয়েই পার করেন কাজের অপেক্ষায়।

কাজের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকায় দিনমজুর আব্দুল গনি এসেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে।তিনি বলেন, ‘গত সপ্তাহে মাত্র দুইদিন কাজ পেয়েছি। বাকি দিনগুলো কাজ না পেয়ে ফিরে গেছি। এভাবে কখনও খেয়ে,ম কখনও না খেয়ে কাজের অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।’    

অসহায় আবদুল গনির বলেন, ‘আজ বাড়িতে তো ছেলে মেয়েরা না খেয়ে আছে। আমার দিকে চেয়ে আছে। এখান থেকে কখন টাকা পাঠামু। বৃষ্টিতে পথঘাট ডুইবা গেছে। মাঠে কাম-কাজ নেই। এমন চললে কি করবো। না খেয়েতো আর থাকা যায় না।’

দিনাজপুর আবুল কাশেম বলেন, ‘কাম নাই খাবো কি? আমি না হয় দিনে কোনও রকমে এক বেলা খেয়ে বেঁচে আছি। বাড়িতে মা-বাপ, ছোট ছোট ভাই বোনেরা উপোস থাকছে। এমন বৃষ্টি হলে তো পরিবার নিয়া না খেয়ে মরা লাগব।’

কাজের অপেক্ষায় থাকা অন্য শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দিনাজপুর, রংপুর, নীলফামারী, লক্ষ্মীপুর, খুলনা, বরিশাল, পঞ্চগড়, ভোলা, নোয়াখালী, হবিগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন জেলা থেকে কাজের জন্য শহরে প্রাণকেন্দ্রে শ্রমিকরা কাজের জন্য আসেন প্রতিদিন সকালে। শুকনা মৌসুমে তাদের আয় রোজগার ভালো থাকলেও হয়। বর্ষায় আয় কমে যায়। তবে এবার অবস্থা সবচেয়ে খারাপ।

স্থানীয় লোকজন জানান, টানা ও ভারি বৃষ্টিতে কুমিল্লা শহরসহ আশপাশের এলাকাগুলো ডুবে গেছে। এ ছাড়াও নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ফসলের জমি ডুবে গেছে আর দিনব্যাপী বর্ষণের কারণে শ্রমিকের চাহিদা নেই বললেই চলে।

/এসএমএ/

আরও পড়ুন
বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে ফের বন্যা ১০ জেলায়