লালমনিরহাটে বন্যার পানিতে ভেসে গেছে শত শত পুকুরের মাছ

পানিতে ভেসে গেছে শত শত পুকুরের মাছগত চার দিনে  অবিরাম বৃষ্টিপাত ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে লালমনিরহাটে বন্যা দেখা দিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ধরলার পানি বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। ভেঙে গেছে বাঁধ। ভেসে গেছে শত শত পুকুরের মাছ। তলিয়ে গেছে রোপা, আমন ও সবজিন ক্ষেত। 

বুমকা (কামাড়পাড়া) এলাকায় ভেঙে গেছে পাউবো’র বাঁধএদিকে, লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ও কুলাঘাট ইউনিয়নের দু’টি বাঁধ ভেঙে গেছে। মোগলহাট ইউনিয়নের বুমকা (কামারপাড়া) ও কুলাঘাটের শিবের কুটি নামক এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে বুমকা কামারপাড়া এলাকার বাঁধটির পশ্চিমে ও পূর্বে থাকা ১৫টি পরিবারের ঘরবাড়ি ও গাছপালা সব নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। বাঁধ ভেঙে ধরলার পানি পার্শ্ববর্তী এলাকায় ঢুকে পড়ায় শত শত পুকুরের মাছ বানের পানিতে ভেসে গেছে। রোপা আমন ও সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে।

বন্যা কবলিত এলাকার লোকজন রাস্তায় প্লাস্টিক টানিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।  এসব এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও শুকনা খাবারের  সংকট দেখা দিয়েছে। পায়খানা না থাকায় নারীরা মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।      

ধরলা নদীর বাঁধ ভেঙে আশেপাশের এলাকায় ঢুকে পড়ছে পানিমোগলহাট ও কুলাঘাট ইউনিয়নে অবস্থিত বোয়ালমারী ও খারুয়ার চরে প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এসব লোকজনকে রাতের মধ্যেই উদ্ধার করা হবে বলে জানিয়েছেন মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান ও কুলাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী।

লালমনিরহাট-বুড়িমারী স্থলবন্দরগামী মহাসড়কে বন্যার পানিএদিকে ধরলা ও সিঙ্গিমারী নদীর বন্যার পানিতে লালমনিরহাট-বুড়িমারী স্থলবন্দরগামী জাতীয় মহাসড়কটির পাটগ্রামের অংশ  তলিয়ে গেছে। বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে আমদানি-রফতানি, পণ্য পরিবহনসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বুড়িমারী স্থলবন্দরের  সঙ্গে সড়কপথে সারাদেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় মহাসড়কটি হুমকির মধ্যে রয়েছে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক সাফিউল আরিফ বলেন, ‘পাটগ্রাম ও সদর উপজেলার বন্যা কবলিত এলাকার ক্ষয়ক্ষতি এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা করার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তারা বন্যা কবলিত এবং ভেঙে যাওয়া বাঁধগুলো পরিদর্শন করেছেন। এসব এলাকায় ত্রাণ তৎপরতার প্রস্তুতি চলছে।’

/এপিএইচ/