কুড়িগ্রামে হু হু করে বাড়ছে পানি, নতুন এলাকা প্লাবিত

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতিজেলার সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। ফলে জেলার ৯ উপজেলার নিম্নাঞ্চলের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানি বাড়ার ভয়াবহতায় নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ছুটছেন বন্যার্তরা।

গত ১২ ঘণ্টায় (রবিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) ধরলা নদীর পানি ৪৫ সেন্টিমিটার বেড়ে কুড়িগ্রাম ফেরি ঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১০৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে । এদিকে  ব্রহ্মপুত্রের পানি বেড়ে চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া  পানি বাড়ছে তিস্তা ও দুধকুমারেও।  গত চারদিন ধরে পানি বাড়ার কারণে গবাদী পশু এবং জিনিসপত্র নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ছুঁটছেন বন্যা কবলিত মানুষ।

কুড়িগ্রামে বন্যা-৫এদিকে ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের গোরকমণ্ডল এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় আরও ছয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। গোরকমণ্ডল ও বালাহাট বিওপি ক্যাম্পে পানি প্রবেশ করেছে। উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে পানি প্রবেশ করায় বন্যাকবলিতরা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ছুটছেন। 

কুড়িগ্রামে বন্যা-২বালারহাট বাজার সংলগ্ন নাওডাঙ্গা ডিএস দাখিল মাদ্রাসায় প্রায় চার শতাধিক বন্যাকবলিত মানুষ আশ্রয় নিলেও শনিবার রাত থেকে তারা কোনও খাবার পাননি বলে অভিযোগ করেছেন। একই  অভিযোগ করেছেন গোরকমণ্ডল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নাওডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া মানুষরা।

কুড়িগ্রামে বন্যা-১ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবেন্দ্র নাথ ঊরাঁও জানান, উপজেলা পরিষদ চত্বর সহ আমার উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে পানি প্রবেশ করেছে। এসব ইউনিয়নের প্রায় সত্তুর হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। মানুষ দিশেহারা হয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ছুটছে। আমরা মাঠে রয়েছি মানুষদের সহায়তার জন্য।

কুড়িগ্রামে বন্যা-৪সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম-ভূরুঙ্গামারী সড়কের পুর্তন পাটেশ্বরী বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি অংশ দেবে গেছে এবং এ  সড়কের সাতটি পয়েন্টে প্রায় সাড়ে সাত কিলোমিটার রাস্তা পানিতে প্লাবিত হয়ে কুড়িগ্রাম ভূরুঙ্গামারী যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।  অন্যদিকে ভূরুঙ্গামারীর সোনাহাট - কঁচাকাটা সড়কের বলদিয়া ব্রিজ বন্যার পানিতে ভেঙ্গে গেছে বলে জানা গেছে।

কুড়িগ্রামে বন্যা-৮এছাড়াও বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে পড়েছে জেলা সদরের পাঁচটি ইউনিয়ন। এসব ইউনিয়নের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যার্তদের আশ্রয়ের জন্য খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিন আল পারভেজ।  তিনি জানান, আশ্রয়কেন্দ্রে আসা মানুষদের শুকনো খাবার সরবরাহের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আমরা প্রশাসনিকভাবে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছি।

/এসএনএইচ/