তীব্র পাহাড়ি ঢলে আখাউড়া স্থলবন্দরের কার্যক্রম ব্যাহত

বন্যাকবলিত ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার একটি গ্রামভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হলেও রবিবার (১৩ আগস্ট) দুপুর থেকে আখাউড়া স্থল বন্দরে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম ফের শুরু হয়েছে। তবে স্থল শুল্ক স্টেশনসহ আশপাশের এলাকায় পানি জমে থাকায় ব্যাহত হয়েছে স্থলবন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম। এদিকে, ঢাকা-আগরতলা আন্তর্জাতিক সড়কের গাজীর বাজার এলাকার বেইলি ব্রিজের মাঝখানের পিলার হেলে গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঢল অব্যাহত থাকলে সেতুটি যেকোনও সময় অচল হয়ে পড়বে। এতে ফের বন্ধ হয়ে যাবে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম। স্থানীয় সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ বলছে, পিলার মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে, মঙ্গলবারের মধ্যে তা শেষ হবে।
বন্দরের ব্যবসায়ী আব্বাস ভূইয়া, মনির হোসেন বাবুল, আক্তার হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, উজান থেকে নেমে আসা পানির তোড়ে শনিবার দিনভর আখাউড়া-আগরতলা আন্তর্জাতিক সড়কের বেশকিছু অংশ ডুবে ছিল। পাশাপাশি আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশন, বিজিপি চেকপোস্ট ও ইমিগ্রেশন ভবনেও জমে ছিল হাঁটুপানি। এতে স্থলবন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ থাকে।
ব্যবসায়ীরা জানান, আখাউড়া সিএনবি সড়কের পাশে জাজি খালে তীব্র স্রোত থাকায় ঢাকা-আগরতলা আন্তজার্তিক সড়কের গাজীর বাজার এলাকার বেইলি ব্রিজের মাঝখানের পিলার হেলে গেছে। সেতুটি হেলে পড়লে কিংবা বিকল হলে আখাউড়া স্থলবন্দরে যেকোনও মুহূর্তে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
হেলে পড়েছে ঢাকা-আগরতলা আন্তর্জাতিক সড়কের একটি বেইলি ব্রিজের পিলারএদিকে, রবিবার দুপুরে গাজীর বাজার এলাকায় ব্রিজটি পরিদর্শন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এহেত এশাম রাশেদ। এসময় তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পানির তীব্র স্রোতের কারণে ব্রিজের নিচের একটি পিলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটি মেরামতের কাজ এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। আশা করি, মঙ্গলবারের মধ্যে কাজ শেষ হবে।’
এদিকে, পানি কমতে শুরু করলেও আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের কালিকাপুর, বীরচন্দ্রপুর, আবদুল্লাহ্পুর, বঙ্গেরচর, কেন্দাই, রহিমপুর, আনন্দপুর, ভুবনবন এলাকার অনেক এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তবে উজানে ভারি বৃষ্টিপাত না হলে দুয়েকদিনের মধ্যেই পানি আরও কমে যাবে বলে আশা করছেন স্থানীয় গ্রামবাসী।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ শামছুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গতকালের (শনিবার) তুলনায় আজ পানি কমেছে। তারপরও পানি জমে থাকা মনিয়ন্দ এলাকায় পানিবন্দি মানুষের মধ্যে শুকনো খাবার হিসেবে চিড়া, গুড় বিতরণ করা হয়েছে।’ পানি না নামা পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার সকাল থেকে ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি আখাউড়া স্থলবন্দর সংলগ্ন খাল ও হাওরা নদী উপচে দেশের ভেতরে ঢুকতে থাকে। ওইদিন দুপুর থেকে অস্বাভাবিকভাবে পানি বাড়ার কারণে শনিবার দুপুর পর্যন্ত আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়ন ও মোগরা ইউনিয়নের অন্তত ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে করে ওইসব গ্রামের রাস্তাঘাট সব পানিতে ডুবে যায়। পানিবন্দি হয়ে পড়েন অন্তত ১৫ হাজার মানুষ।

আরও পড়ুন-

দিনাজপুরে বন্যায় ১৪ জনের মৃত্যু

শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে ঠাকুরগাঁওয়ে বন্যাদুর্গতরা

/টিআর/