পূর্ব ছাতনাই কলোনি গ্রামের মিজানুর রহমান (৪৫) বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও দুর্ভোগ কমেনি জেলার ডিমলা ও জলঢাকার দশটি ইউনিয়নের ১৫ হাজার মানুষের। এখনও পানিতে তলিয়ে রয়েছে তাদের বাড়ি-ঘর। সরকারিভাবে যেটুকু সহযোগিতা করা হচ্ছে, সেটি পর্যাপ্ত নয়।’
পুর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান জানান, বানভাসী মানুষের বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। ঘর-বাড়ি স্থাপন, ফসলী জমির বীজ সরবারহ, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের (এনজিও) ঋনের কিস্তি সাময়িক বন্ধসহ আর্থিক সহায়তা একান্ত দরকার।
উপজেলার খালিশা চাপানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান বলেন, ‘আমার এলাকার ৬৯২ জন বানভাসীকে ১০ কেজি করে চাল ও শুকনা খাবার দেওয়া হয়েছে। তা প্রয়োজনের তুলনায় একবারেই কম।’
তিনি বলেন, ‘পানিবন্দি পরিবারগুলোতে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত নানা রোগ। শিশুদের দেখা দিয়েছে চর্মরোগ আমাশয় ও ডায়রিয়া। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছে জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে খোলা হয়েছে রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র। পাশাপশি ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো দিচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা।’
নীলফামারী সিভিল সার্জন রণজিত কুমার বর্মন বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ‘বন্যা কবলিত ইউনিয়নগুলোতে সার্বক্ষণিক স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা কাজ করছেন।’
মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) সকাল ৬টায় বিপদসীমার (৫২ দশমিক ৪০) ৫০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। গত বুধবার (৯ আগস্ট) ভারী বর্ষণ আর উজানের ঢলে নীলফামারী জেলার তিনটি উপজেলার নিম্নাঞ্চলসহ সদর, ডিমলা ও জলঢাকার দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে।
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছিল। শুক্রবার (১১ আগস্ট) সকাল ৬টায় বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে তা শনিবার (১২ আগস্ট) বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
এদিকে রবিবার (১৩ আগস্ট) সকাল ৬টায় বিপদসীমার (৫২ দশমিক ৪০) ৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলে তিস্তা অববাহিকায় রেড এলার্ট জারী করে পাউবো।
গত রবিবার (১৩ আগস্ট) ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ী ঢলে বিপদসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়।
/এনআই/