জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত ত্রাণ পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে ক্ষতিগ্রস্তরা ত্রাণ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠছে। সরজমিনে এলাকায় বিভিন্ন এলাকা ঘুরেও এমন চিত্রও পাওয়া গেছে।
এলাকায় চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। এখনও অনেক লোক রাস্তা ও বাঁধের ওপর খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। সরকারি কোনও সহযোগিতা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ তাদের।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ১৬ আগষ্ট পর্যন্ত ২৪২ মেট্রিকটন জিআর চাল, আট লক্ষ ৭৫ হাজার নগদ টাকা ও ১৭শ প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। আরও ১৪০ মেট্রিকটন জিআর চাল ও চার লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এসব ত্রাণ বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) থেকে বিতরণ করা হবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে চিকিৎসা সেবা, ত্রাণ বিতরণ ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট-ব্রিজ মেরামতে প্রশাসনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর তিনটি টিম লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী ও হাতীবান্ধা উপজেলায় সহায়তা দিচ্ছে। পাশাপাশি বিজিবিও সহায়তা করছে।’
ত্রাণ পর্যাপ্ত কিনা জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ জানান, বন্যা কবলিত এক লাখ দুই হাজার ৭৫০টি পরিবারের জন্য যথেষ্ট নয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আরও বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিধু ভূষণ রায় জানান, জেলায় ৩১ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন তলিয়ে গেছে। ১৮ হাজার হেক্টর রোপা আমনের পানি নেমে গেলেও এখন পর্যন্ত ১৩ হাজার হেক্টর জমির ক্ষেত পানির নিচের রয়েছে। এসব জমির ক্ষেতে কিছুটা ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
লালমনিরহাট জেলায় ভয়াবহ বন্যায় সাত হাজার ৭০২টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে বলে দাবি করেছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘এসব পুকুরে এক হাজার ১৭৪ মেট্রিকটন মাছ ভেসে গেছে। প্রতি কেজি মাছের দর ৯০ টাকা ধরলে টাকার অঙ্কে ১০ কোটি প্রায় ৫৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘বুড়িমারী-লালমনিরহাট-রংপুর-পার্বতীপুর, লালমনিরহাট-কাউনিয়া-কুড়িগ্রাম, বুড়িমারী-লালমনিরহাট-সান্তাহার এবং পঞ্চগড়-ঠাকুরগাও রুটে ট্রেন সার্ভিস চালু করা সম্ভব হয়নি। এসব রুট মেরামত করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দ্রুত মেরামত করা সম্ভব হলে শিগুগরই ট্রেন সার্ভিস চালু করা হবে।’
/এসএমএ/