রাবি ও রুয়েট ছাত্রলীগের মধ্যে উত্তেজনা, উভয় ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন

রাবি ও রুয়েটের লোগো

ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জের ধরে নিজেদের এক নেতাকে মারধর করেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী।  খবর পেয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের এক কর্মী ওই নেতাকে উদ্ধার করতে গেলে উল্টো তাকেই শিবির সন্দেহে পুলিশে দেন রুয়েট ছাত্রলীগের নেতারা।  এ নিয়ে এখন দুই শাখার নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এদিকে, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে উভয় ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ওসি মেহেদী হাসান বলেন, ‘একজনকে শিবির সন্দেহে পুলিশে দিয়েছে রুয়েট ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে উভয় ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা ৬টার দিকে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে রুয়েট শাখা ছাত্রলীগের উপ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক নির্ঝর আহমেদকে বঙ্গবন্ধু হলে মারধর করেন সাধারণ সম্পাদক তপুর অনুসারীরা। এসময় নির্ঝর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কয়েকজনকে ডেকে পাঠান। তারা আসার পর তপুর অনুসারীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। পরে তপুর অনুসারীরা তাদের ধাওয়া দেন। এসময় রাবি ছাত্রলীগ কর্মী মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম হীরাকে আটক করে শিবির সন্দেহে পুলিশে দেন রুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তপু। গুরুতর আহত হওয়ায় নির্ঝরকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রুয়েটে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে রুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী মাহফুজুর রহমান তপু বলেন, ‘নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি থেকেই রুয়েটে একটু সমস্যা হয়েছিল। সে সমস্যার সমাধানের জন্য আমি আর সভাপতি ক্যাম্পাসে আসার সময় বহিরাগত কয়েকজন আমাদের চাকু নিয়ে ধাওয়া দেয়। আমরাও পাল্টা ধাওয়া দেই। এক পর্যায়ে তারা মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে গেলেও একজনকে ধরে আমরা পুলিশে দিয়েছি।’

তবে আটক হীরা রাবি ছাত্রলীগ কর্মী জানার পর তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ কর্মী হলে অন্য একজন ছাত্রলীগ কর্মীর ওপর চাকু নিয়ে হামলা করতে আসতো না। তাই তাকে শিবিরকর্মী হিসেবেই পুলিশে দেওয়া হয়েছে।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘এমন কিছু ঘটেছে বলে আমি জানি না। এখনই খোঁজ নিচ্ছি। যদি এমন কিছু ঘটে, তবে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অন্যদিকে, রুয়েটের ওই ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সন্ধ্যা থেকেই ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকসহ প্রবেশপথগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশের প্রহরা বসানো হয়। এসময় ওই প্রবেশপথগুলোতে শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্র দেখা ও সন্দেহভাজনদের তল্লাশি করে পুলিশ। পুলিশের এই কড়াকড়ির ভেতরেই সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হবিবুর রহমান হলের ভেতরে বিকট শব্দে একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা। এরপর ক্যাম্পাস জুরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে একযোগে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সবগুলো আবাসিক হল থেকে মিছিল বের করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘রুয়েটের ঘটনায় আমাদের ক্যাম্পাসে যেন কোনও অপ্রীতিকর অবস্থার সৃষ্টি না হয়, সেজন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে কাউকে আটক করা হয়নি।’

/এমএ/