নওগাঁ জেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা একেএম আব্দুল মান্নান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রায় দুই লাখ লোক পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। পানিবন্দি ও বাঁধে আশ্রয় নেওয়াদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।’
জানা গেছে, নওগাঁ শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট যমুন নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নওগাঁ শহর রক্ষা বাঁধ উপচে এবং বাঁধের আউটলেট (নদী থেকে পানি বের করে দেওয়ার নালা) দিয়ে নওগাঁ শহরের বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
বাঁধে আশ্রয় নেওয়া মুনিয়া বেগম বলেন, ‘বন্যার পর থেকে আমরা কোন রিলিফ পাইনি। কেউ আমাদের খোঁজ নেয় না। কোন মতোন পরিবারসহ বেঁচে আছি।’
রাজিয়া বেগম নামের আরেকজন বলেন, ‘এত টাকা খরচ করে বাঁধ সংস্কার করে কি লাভ। সব পানি তো শহরের মধ্যে ঢুকে গেছে। বন্যার সময় আমরা কি খাই, না খাই— কেউ খবর রাখে না।’
নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আউটলেট-ইনলেটগুলো যথাযথ নকশা ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে। তবে বর্তমানে এগুলোতে কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি দেখা দিয়েছে। যা আগামীতে সংস্কার করা হবে।’
এবারের বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা মান্দা উপজেলার প্রসাদপুর ইউনিয়নের মোল্লাপাড়া গ্রাম। প্রসাদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের বুড়িদহ স্থানে সুজন সখি ঘাট ভেঙে ৭৫০ টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ফলে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধে ১৫০ টি পরিবার তাদের বাড়ির আসবাবপত্র ও গবাদি পশুসহ আশ্রয় নিয়েছে। তাদের খাবার বিশুদ্ধ পানিসহ ওষুধ সংকট দেখা দিয়েছে।’
বাঁধে আশ্রয় নেওয়া মজিবর বলেন, ‘বন্যায় আমার বাড়ি ও ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।’
মফিজ উদ্দীন নামের আরেকজন বলেন, ‘৬ দিন থেকে আমরা বাঁধে আশ্রয় নিয়েছি। কিন্তু সরকারি তেমন কোনও সাহায্য পাইনি।’
নওগাঁর জেলা প্রশাসক ড. আমিনুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনেক বলেন, ‘ত্রাণের চাল ও নগদ অর্থ প্রদানের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত ২০০ মেট্রিক টন চাল ও প্রায় ৮ লাখ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। যা বিতরণ চলছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে ৪৫ টি আশ্রয় শিবির খোলা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘২ লাখ ৪৩ হাজার ১শ জন মানুষ বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। বন্যাকবলিত এলাকায় মেডিক্যাল টিম চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে।’
/এনআই/
আরও পড়ুন:
কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটে পন্টুন ডুবে দুর্ভোগ