এদিকে, নলডাঙ্গা উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে বন্যার পানি ঢুকেছে। দুই উপজেলা মিলে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মোট ১৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আর বন্যার কারণে বন্ধ করা হয়েছে ৫২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
সিংড়া আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে রবিবার সন্ধা থেকে রান্না করা খাবার সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হলেও নলডাঙ্গায় খাবার সরবরাহ করা হবে সোমবার থেকে। বন্যার কারণে বানভাসি মানুষ বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজন আর আশ্রয়কেন্দ্রে উঠলেও বিপাকে পড়েছেন পশুখাদ্য নিয়ে।
সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল আহসান জানান, ইতোমধ্যেই উপজেলার চাঁদপুর-বলিয়াবাড়ি বাঁধ, নওগাঁ বাজারপাড়া বাঁধ ও টেমুকনওগাঁ বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব বাঁধের ওপর বালির বস্তা দিয়ে পানি প্রবাহ ঠেকানোর ব্যবস্থা করা হলেও প্রচণ্ড স্রোতে এসব বস্তা ভেসে যাচ্ছে। ফলে বাঁধের পানি প্রবাহ ঠেকানো যাচ্ছে না।
নাজমুল আহসান জানান, ইতোমধ্যেই বানভাসি মানুষদের জন্য উপজেলায় মোট ১৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যা থেকে এসব আশ্রয়কেন্দ্রের মানুষদের জন্য রান্না করা খাবার সরবরাহ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বন্যার কারণে উপজেলার মোট ৩৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
কৃষি কর্মকর্তার জানান, বাঁধের দুই পাশের পানির উচ্চতার পার্থক্য চার থেকে পাঁচ ফুট। বাঁধগুলো ভেঙে গেলে আরও শত শত একর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শুধুমাত্র পুঠিমারী বিলেই সাত থেকে আটটি গ্রামের হাজারো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নষ্ট হবে শত শত একর জমির ফসল।
সাজ্জাদ হোসেন জানান আরও জানান, নতুন করে আবাদি জমি নিমজ্জিত হয়েছে ৫০ হেক্টর। আর বর্তমানে সিংড়া উপজেলায় সম্পূর্ণ নিমজ্জিত ফসলের জমির পরিমাণ ছয় হাজার ২৮০ হেক্টর। অন্যদিকে আংশিক নিমজ্জিত জমির পরিমাণ তিন হাজার ৩০৫ হেক্টর।
নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজা হাসান জানান, নলডাঙ্গা উপজেলায় মোট ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আর বানভাসি মানুষদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে দুইটি। বন্যার কারণে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের প্রায় দুই হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রেজা হাসান জানান, ইতোমধ্যেই সব ইউনিয়নে চালসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী পৌঁছেছে। সোমবার থেকে বানভাসী মানুষদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হবে।
সরেজমিনে সিংড়া ও নলডাঙ্গা উপজেলার বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনের দেখা যায়, স্থানীয় জনগণ আর প্রশাসনের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে বাঁধগুলো রক্ষার। কিন্তু ঠেকাতে পারছেন না পানির প্রবাহ। পরিবারের লোকজন বাড়ির গবাদিপশুসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন আত্মীয়-স্বজন ও আশ্রয়কেন্দ্রে। স্থানীয় প্রশাসন, এমপি, রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন বন্যার্তদের পাশে সহায়তা দিলেও কৃষকরা সমস্যায় পড়েছেন গবাদিপশুর খাবার নিয়ে। সামনে ঈদ-উল-আজহার জন্য অনেকে গবাদিপশু পালন করলেও সেগুলো বিক্রয় কিংবা তাদের খাবার যোগাড় করতে পারছেন না বানভাসি কৃষক।
/এসএমএ/