এক বাল্ব ও ফ্যানে বিদ্যুৎ বিল ২১৫৪ টাকা!

নিজ ঘরে নূর নাহার বেগম (ছবি- প্রতিনিধি)

একটা বাল্ব ও একটা ফ্যান ব্যবহার করেন হোটেলকর্মী নূর নাহার বেগম। আর এতেই তার আগস্ট মাসের বিদ্যুৎ বিল এসেছে দুই হাজার ১৫৪ টাকা! এমন ভুতুরে বিল আসায় বিরাট বিপাকে পড়েছেন লালমনিরহাট সদর উপজেলার খোঁচাবাড়ী শান্তিনগর এলাকার এই বিধবা। বিল সংশোধনের জন্য এখন তিনি আক্ষরিক অর্থেই দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

নূর নাহার বেগমের বিদ্যুৎ বিলের রশিদে দেখা যায়, তার মিটারের আগের রিডিং ৮৪০ ও বর্তমান রিডিং ১২৪০। আগস্ট মাসে তিনি ৪০০ ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ করেছেন। ডিমান্ড চার্জ ১৫ টাকা, সার্ভিস চার্জ ১০ টাকা, ভ্যাট (পাঁচ শতাংশ) ১০৩ টাকাসহ তার বিদ্যুৎ বিল এসেছে দুই হাজার ৫৪ টাকা।

নূর নাহার বেগম বলেন, ‘আমি নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করি। গত এপ্রিল মাসে আমার বিদ্যুৎ বিল আসে ১৬৬ টাকা, মে মাসে আসে ১৬৭ টাকা, জুন মাসে আসে ২০১ টাকা, জুলাই মাসে আসে ২০২ টাকা। আমি তা পরিশোধ করেছি। কিন্তু আগস্ট মাসে আমার বিদ্যুৎ বিল এসেছে ২১৫৪ টাকা। এই বিল নিয়ে এখন বিরাট সমস্যায় পড়েছি; সমাধানও কোথাও পাচ্ছি না। এদিকে, ২৪ সেপ্টেম্বর বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের সময় শেষ হয়ে গেছে। আগামী মাসেও যদি এতো টাকা বিল আসে। তাহলে কীভাবে তা পরিশোধ করবো। চিন্তায় রাতে ঘুমাতে পর্যন্ত পারছি না।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে নূর নাহার বেগমের একমাত্র ছেলে ঢাকায় থাকেন। আর খোঁচাবাড়ী শান্তিনগর এলাকায় তিন শতক জমির ওপর তৈরি টিনের ঘরে একা থাকেন নূর নাহার বেগম। জেলা শহরের বিসমিল্লাহ রেস্টুরেন্টে তিনি তরকারী কাটা ও থালাবাসন ধোয়ার কাজ করেন। এভাবে সারাদিন কাজ করে পান ১৬০ টাকা।

বিদ্যুৎ বিল হাতে নূর নাহার বেগম (ছবি- প্রতিনিধি)

বিদ্যুৎ অফিস সূত্র জানায়, নূর নাহার বেগম বিদ্যুতের ৫৬৭৭২৮৬৪ নং আবাসিক গ্রাহক। তার বিদ্যুৎ বিলের রশিদ নং ৪৬৬৬৭৩২।

নূর নাহার বেগমের প্রতিবেশী আলেয়া বেগমের ঘরে একটি টিভি, একটি ফ্রিজ, দুইটি ফ্যান, তিনটি বাল্ব রয়েছে। তিনি আগস্ট মাসে ৬০ ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ করেছেন। তার বিল এসেছে ২৬৬ টাকা। তার গ্রাহক নং ৫৬৬৮১৮৬৭ এবং তিনিও আবাসিক গ্রাহক।

এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা শাহ জালাল বলেন, ‘শুধু নূর নাহার বেগমই নন; আরও অনেকেরই এমন ভুতুরে বিল এসেছে। এ নিয়ে বিদ্যুৎ অফিসে গিয়েও কোনও প্রতিকার পাওয়া যায় না। উপরন্তু বিদ্যুৎ বিলের টাকা পরিশোধ না করলে লাইন কেটে দেওয়া হয়।’

লালমনিরহাট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসনাত জামান বলেন, ‘আগস্ট মাসের বিদ্যুতের বিলের কাগজসহ অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এর বাইরে তিনি আর কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।