আজ কবি রুদ্রের জন্মবার্ষিকী

কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ (ছবি- অনলাইন থেকে নেওয়া)

‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরনো শকুন’—এই নির্মম সত্য অবলোকন করেছিলেন তিনি। পাশাপাশি ততোধিক স্পর্ধায় তিনি উচ্চারণ করেছেন—‘ভুল মানুষের কাছে নতজানু নই’৷ সত্তর দশকের মাটি ও মানুষের কাছে আমূল দায়বদ্ধ এই কবির নাম রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ। আজ সোমবার (১৬ অক্টোবর) তার ৬১তম জন্মবার্ষিকী। কবিতায় দ্রোহের শিল্পমগ্ন উচ্চারণ তাকে দিয়েছে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা কবির স্বীকৃতি। ১৯৯১ সালের ২১ জুন মাত্র ৩৫ বছর বয়সে অকালপ্রয়াণ হয় তারুণ্য ও সংগ্রামের প্রতীক এই কবির।

দিনটির স্মরণে রুদ্র স্মৃতি সংসদ, মিঠেখালি আজ সোমবার কবির গ্রামের বাড়ি মংলার মিঠাখালিতে সকালে শোভাযাত্রা সহকারে কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, মিলাদ মাহফিল ও দোয়ার আয়োজন করেছে। মংলা সরকারি কলেজ সকাল ১০টায় কলেজ মিলনায়তনে কবির স্মরণে স্মরণ সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

দিনটির স্মরণে রুদ্র সংসদ, ঢাকা সোমবার বিকাল ৫টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সুইমিং পুলে আয়োজন করেছে স্মরণ সভা। সভা শেষে রুদ্রের কবিতা আবৃত্তি ও রুদ্রের গান পরিবেশিত হবে। পাশাপাশি, কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘রুদ্রসমগ্র’ নামে কবির জীবনী, যাবতীয় সাহিত্যকর্ম, আলোকচিত্র, গান ইত্যাদি নিয়ে তৈরি হচ্ছে ওয়েবসাইট রুদ্রএমএস ডটকম (ruddroms.com)।

মাত্র ৩৫ বছরের (১৯৫৬-১৯৯১) স্বল্পায়ু জীবনে তিনি সাতটি কাব্যগ্রন্থের পাশাপাশি গল্প, কাব্যনাট্য রচনা করেছেন। এছাড়া ‘ভালো আছি ভালো থেকো’সহ অর্ধ-শতাধিক গান রচনা ও সুরারোপ করেন। পরবর্তীকালে ‘ভালো আছি ভালো থেকো’ গানটির জন্য তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির পক্ষ থেকে ১৯৯৭ সালের শ্রেষ্ঠ গীতিকারের (মরণোত্তর) সম্মাননাও লাভ করেন।

‘উপদ্রুত উপকূল’ ও ‘ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম’ কাব্যগ্রন্থ দু’টির জন্য ‘সংস্কৃতি সংসদ’ থেকে পরপর দু’বছর ‘মুনীর চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার’ পান কবি রুদ্র।

কবি রুদ্রের দেহের প্রয়াণ হয়েছে, কিন্তু ‘বাতাসে লাশের গন্ধ’ কিংবা ‘ভালো আছি ভালো থেকো’র মতো পংক্তিমালা দিয়ে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন তিনি।