তাড়াশে যুবলীগ নেতার মুক্তির দাবিতে অর্ধদিবস হরতাল পালিত

 

সিরাজগঞ্জে যুবলীগ নেতা ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফরহাদ আলী বিদ্যুতের মুক্তির দাবিতে ডাকা অর্ধদিবস হরতাল পালিত হয়েছে। শনিবার (২১ অক্টোবর)  সকালে বিদ্যুতের স্বজন ও সমর্থকরা হরতালের সমর্থনে উপজেলা সদরে বৃষ্টির মধ্যে বিক্ষোভ করেন। শুক্রবার রাতে মাইকিং করে তাড়াশ উপজেলা যুবলীগ হরতাল আহ্বান করে।  বৃষ্টির কারণে উপজেলা সদরে ভোর থেকেই তেমন লোকজন ছিল না, তার ওপর হরতালের কারণে জনজীবন কিছুটা স্থবির হয়ে পড়ে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল।

ফরহাদ আলী বিদ্যুত তাড়াশ উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হককে মারধর ও অফিস ভাঙচুরের মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি।

শুক্রবার দুপুরে ফরহাদ আলী বিদ্যুতকে গ্রেফতারের পর তার বিক্ষুব্ধ স্বজন ও সমর্থকরা সদর ইউপি চেয়ারম্যান বাবুল শেখের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায় এবং তার মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় রাতে তাড়াশ থানায় ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন বাবুল শেখ। মামলার পর পুলিশ রাতেই বিদ্যুতের চাচাতো ভাই তাড়াশ উপজেলা সদরের দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা রাজুর ছেলে ছাইদুরকে (৩২) গ্রেফতার করেছে বলে তাড়াশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফজলে আশিক জানান। এর আগে গত বছরের ৩০ অক্টোবর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হককে মারধর ও সরকারি অফিস ভাঙচুর মামলারও বাদী চেয়ারম্যান বাবুল শেখ।

সিরাজগঞ্জশনিবার দুপুরে উপজেলা যুবলীগ দলীয় কার্যালয়ে গ্রেফতার উপজেলা যুবলীগ নেতা ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. ফরহাদ আলী বিদ্যুতের মুক্তির দাবিতে সমাবেশ করা হয়। এ সময় বক্তব্য রাখেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিনুর রহমান লাবু, আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন তাপস, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন খান, যুবলীগ নেতা শামিম আহমেদ শান্ত, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পিএম রাসেল ও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইকবাল হাসান রুবেল প্রমুখ।

তাড়াশ উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হক হরতাল প্রসঙ্গে বলেন, ‘মামলার আসামি বিদ্যুৎ দীর্ঘদিন পালিয়ে ছিল। তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি থাকায় সঙ্গত কারণেই পুলিশ তাকে ধরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে। শনিবার সকাল থেকে বৃষ্টিতে এমনিতেই তাড়াশে কোনও লোকজন ছিল না। বৃষ্টির কারণে হরতাল একেবারেই ঢিলেঢালা ছিল। বিদ্যুতের আত্বীয়স্বজন ও ভাড়াটে লোকজন নিয়ে এসে বিক্ষোভ-সমাবেশ করা হয়েছে। পলাতক ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির মুক্তির দাবিতে এ ধরনের হরতাল কতটা যুক্তিসংঙ্গত।’

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৩০ অক্টোবর তাড়াশ উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হককে তার নিজ অফিস কক্ষে বেধড়ক মারধর ও মাথায় ফুলদানী দিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়। ওই ঘটনার জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে স্থানীয় এমপি গাজী ম.ম.আমজাদ হোসেন মিলনকে দায়ী করে তাকে ও তার ছেলে-স্বজন এবং ১৪ জন সমর্থকের বিরুদ্ধে এ ঘটনায় তাড়াশ থানায় মামলাও করেন উপজেলা চেয়ারম্যান হকের পক্ষে সদর ইউপি চেয়ারম্যান বাবলু শেখ। গত ২৮ জুন এ মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়। এমপি মিলনকে বাদ দিয়ে ১৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ। ইউপি চেয়ারম্যান বাবলু শেখ পুলিশের ওই চার্জশিটের বিরুদ্ধে আদালত বরাবর এরই মধ্যে নারাজিও দেন। গত ২০ অক্টোবর (শুক্রবার) দুপুরে মামলার অন্যতম পলাতক আসামি তাড়াশ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফরহাদ আলী বিদ্যুতকে গ্রেফতার করে তাড়াশ থানা পুলিশ। ওই ঘটনার পর পরই বিদ্যুতের সমর্থকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে মামলার বাদী সদর ইউপি চেয়ারম্যান বাবুল শেখের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায় এবং তার মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। শুক্রবার রাতে এ বিষয়ে মামলা হয়। এরপর পরই বিদ্যুতের মুক্তির দাবিতে উপজেলা যুবলীগের ব্যানারে শনিবার সকাল-দুপুর অর্ধদিবস হরতালের ডাক দেওয়া হয়।