চিতলমারীতে ভেসে গেছে ১০ কোটি টাকার মাছ

পানিতে ডুবে যাওয়া মাছের ঘেরের একাংশ (ছবি- প্রতিনিধি)

বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার মৎস্য খাত। অতিবৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে এ উপজেলার প্রায় দুই হাজার মাছের ঘের ভেসে গেছে। এতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকার। চিতলমারী উপজেলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন এ তথ্য জানিয়েছেন।

চাষিরা জানান, ঘেরের আইলে (উচু পাড়) জাল দিয়ে মাছ রক্ষার প্রাণপণ চেষ্টা করেন তারা। তবু ভেসে গেছে গলদা, বাগদা চিংড়ি, রুই, কাতলা, মৃগেলসহ নানা প্রজাতির মাছ। পুঁজি হারিয়ে এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা।

তারা আরও জানান, উপজেলার বারাসিরা বিলসহ অন্যান্য বিলে পানি কিছুটা কমছে। তবে এখনও তাদের মাছের ঘেরের আইল জাগেনি। সব মাছের ঘের যেন একটি ঘেরে পরিণত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা আর্থিক সহযোগিতার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।

বারাশিয়া বিলের ঘের ব্যবসায়ী মেসার্স জাহিদ ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ৮৫ বিঘা জমিতে মাছ চাষ করেছিলাম। বাগদা, গলদা, রুইসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ছিল ঘেরে। কিন্তু গত তিন দিনে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টি হয়েছে। পাশপাশি জোয়ারের পানি বেড়ে যাওয়ায় আমার মাছের ঘের ডুবে সব মাছ বের হয়ে গেছে। একইসঙ্গে নষ্ট হয়ে গেছে ঘেরের পাড়ের সব সবজির ক্ষেত।’

তিনি আরও বলেন, ‘৪-৫ লাখ টাকার মাছের খাবারও পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে আমার ৪০-৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এখন আমি সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছি।’ একই অবস্থা অন্য ঘের ব্যবসায়ীদেরও।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, দেশের মধ্যে গলদা চিংড়ি ও সাদা মাছ  উৎপাদনে বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলা প্রসিদ্ধ। প্রাথমিক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত তিন দিনের ভারি বর্ষণে এ উপজেলার এক হাজার ৮শ’ ২৩টি মাছের ঘের ভেসে গেছে। এতে চাষিদের প্রায় ১০ কোটি ১২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয় ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।