নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই ভবন নির্মাণ, একের পর এক দুর্ঘটনা

নেত্রকোনাকোনও নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই নেত্রকোনা শহরের আখড়ামোড় এলাকায় সোনালী ব্যাংকের ছয় তলা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। গত দুই বছর ধরে এভাবে কাজ চলাকালে ভবন থেকে ইঁট, বাঁশ, সুড়কি, কাঠ, রড পড়ে অন্তত ১২ জন হয়েছেন। সর্বশেষ, গত বৃহস্পতিবার ভবনের ওপর থেকে সুড়কি ও বাঁশ পড়ে যমুনা সরকার (১৬) নামের এক গৃহকর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শহরের উকিলপাড়া আখড়ামোড় এলাকায় সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের জেলার প্রধান কার্যালয় নির্মাণকাজ চলছে। প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব জায়গায় পাঁচ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে ছয় তলা এই ভবনের কাজ দুই বছর আগে শুরু হয়। ভবনের সামনে শহরের প্রধান সড়ক ছাড়া আশপাশে বাসাবাড়ি রয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোনও ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা না নিয়েই নির্মাণকাজ শুরু করে।

কাজ শুরুর আট মাস পর ভবনের ওপর থেকে ইট-সুড়কি পড়ে পাশের বাসার সাত বছরের এক শিশু আহত হয়। স্থানীয়রা এ নিয়ে ঠিকাদার পঙ্কজ সরকারকে বারবার বলার পরও তিনি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেননি। বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে ছয় তলার ওপর থেকে সুড়কি ও বাঁশ পড়ে পাশের বাসার যমুনা সরকার নামের এক গৃহকর্মী গুরুতর আহত হন। তাকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় বাসার মালিক রাজন ভদ্রের বড় ভাই নেত্রকোনা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক টিটু রায় বলেন, ‘মেয়েটি মাথায় বেশ আঘাত পেয়েছে। কিছু জরুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষার কথা বলা হয়েছে।’

রাজনের প্রতিবেশী কামরুল ইসলাম বলেন, ঘন বসতি এলাকায় ভবন নির্মাণের সময় যে ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করা হয় ওই ভবন তৈরিতে তা মানা হয়নি। গত দেড় বছরে ভবনটির ওপর থেকে ইট, সুড়কি, লোহা, বাঁশ, কাঠ ইত্যাদি পড়ে অন্তত ১২ জন ছোট বড় দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। বিষয়টি বারবার বলার পরও ঠিকাদার পঙ্কজ বাবু গুরুত্ব দেননি।

জানতে চাইলে পঙ্কজ সরকার বলেন, ‘নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আর দুর্ঘটনায় আহত ওই মেয়েটিকে আমি হাসপাতালে দেখে আসার জন্য লোক পাঠিয়েছিলাম।’ আশপাশের বাসার লোকজন বারবার বলার পরও কেন বিষয়টি নজরে নেননি- এ কথা জিজ্ঞাস করলে তিনি বলেন, ভাই আমি এখন কিছু শুনতে পাচ্ছি না।