সাবেক স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে বাধা দেওয়ায় বাবাকে পুড়িয়ে হত্যা

রহিদুল ইসলামসাবেক স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে বাধা দেওয়ায় বাবাকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ছেলে রহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। গত বৃহস্পতিবার বগুড়ায় আদমদীঘির কুশাবাড়ি মণ্ডল পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। পরে আদালতে অপরাধ স্বীকার করে জবানবন্দিও দিয়েছেন রহিদুল ইসলাম।

রবিবার বিকালে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মামুনের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন ঘাতক ছেলে রহিদুল ইসলাম। পরে তাকে বগুড়া জেল হাজতে পাঠানো হয়।

জবানবন্দিতে তিনি বলেন, ‘তালাক দেওয়া স্ত্রী মর্জিনা বেগমকে ঘরে তুলতে বাধা ও এ আদেশ অমান্য করলে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার হুমকি দেয় বাবা। এক পর্যায়ে ঘুমন্ত অবস্থায় গায়ে কেরোসিন ঢেলে বাবা আব্দুল হামিদকে পুড়িয়ে হত্যা করেছি। ওই আগুনে মা হাফসা বিবিও দগ্ধ হয়েছেন। এ কাজে কয়েকজন ভাড়াটে আমাকে সহযোগিতা করে।’

আদমদীঘি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সায়িদ মো. ওয়াহেদুজ্জামান বলেন, ‘নন্দীগ্রাম উপজেলার আগাপুর গ্রামে হামিদুল ইসলাম-হাফসা দম্পত্তির দুই ছেলে। তাদের মধ্যে ছোট ছেলে রহিদুল ইসলাম প্রায় ছয় বছর আগে পার্শ্ববর্তী গজারিয়া গ্রামের আবদুর রহিমের মেয়ে মর্জিনা বেগমকে বিয়ে করেন। দাম্পত্য কলহ দেখা দেওয়ায় রহিদুল প্রায় তিন মাস আগে মৌখিকভাবে স্ত্রীকে তালাক দেন। পরবর্তীতে স্ত্রীকে ফিরে এনে পুনরায় সংসার করতে চান। এ নিয়ে গ্রামে কয়েকদফা বৈঠক হয়। কিন্তু বাবা হামিদুল ও মা হাফসা এতে রাজি ছিলেন না। এছাড়া স্ত্রীকে বাড়িতে আনলে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার হুমকি দেন তারা। এসব কারণে রহিদুল তার বাবা ও মার প্রতি বিরক্ত হয়ে তাদের হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার রাতে খাওয়ার পর রহিদুল বাবা ও মাকে চেতনানাশক ওষুধ মেশানো ডাবের পানি খেতে দেন। এরপর তিনি পাশের ঘরে ঘুমাতে যান। রাত ১টার দিকে হাফসা বিবির আত্মচিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। তারা ঘরে হামিদুলকে নিহত ও হাফসাকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় দেখতে পান। তখন রহিদুল বাসায় ছিলেন না। পরে প্রতিবেশীরা হাফসাকে উদ্ধার করে বগুড়া শজিমেক হাসপাতাল ভর্তি করেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত শুক্রবার বগুড়া শহর থেকে নিহতের ছেলে রহিদুলকে আটক করা হয়। গত তিনদিন তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি অপরাধ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় বড় ছেলে শাহাজাহান আলী শনিবার রাতে আদমদীঘি থানায় রহিদুলের বিরুদ্ধে মামলা করেন।’

এছাড়াও ভাড়াটে খুনিদের বিষয়ে তদন্ত চলছে। তাদের জড়িত থাকার সত্যতা পাওয়া গেলে গ্রেফতার ও চার্জশিটে নাম উল্লেখ করা হবে বলে জানান ওসি।

আরও পড়ুন:
প্রধান শিক্ষকের চড়ে অসুস্থ প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী