গত রবিবার (২৬ নভেম্বর) কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের তিন জঙ্গির খোঁজ চেয়ে র্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে কলকাতা পুলিশ। ওই খবর অনুযায়ী, ব্লগার খুনের অভিযুক্তসহ তিন জঙ্গি হলো— তামিম ওরফে স্বপন বিশ্বাস, নয়ন গাজি ও উমর ফারুক ওরফে মোহাম্মদ আফতাব খান ওরফে মাহি। কলকাতা পুলিশের ডিসি (এসটিএফ) মুরলীধর শর্মা আনন্দবাজারকে জানিয়েছিলেন, এই তিন জঙ্গিকে খুঁজতে রাজ্যজুড়ে তল্লাশি চলছে। র্যাবের কাছে এই তিন জঙ্গির ছবি ও তথ্যও পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার র্যাবের অভিযান চালানো আস্তানাটি যে চর আলাতুলী এলাকায়, ভারতীয় সীমান্ত থেকে তার দূরত্ব মাত্র ২ কিলোমিটার। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার এই ইউনিয়নটি চোরাচালানের জন্য পরিচিত। ভারতীয় সীমান্তের একদম কাছাকাছি হওয়ার কারণেই প্রশ্ন উঠেছে, চর আলাতুলীতে নিহতরা কলকাতা পুলিশের খোঁজ করা সেই তিন জঙ্গিই কিনা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী র্যাব-৫-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহাবুবুল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তাদের শরীর পুরোটা পুড়ে গেছে। তাদের সঙ্গে খাতা মোবাইল ও কাগজপত্রও পুড়ে গেছে। ফলে তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে কলকতা পুলিশ যে তিন জঙ্গিকে খুঁজছে, তাদের বিষয়টিও আমরা খতিয়ে দেখছি। তাদের পরিচয়ের ক্ষেত্রে সবগুলো সম্ভাবনাকেই নজরে রাখা হয়েছে। ডিএনএ ফরেনসিক প্রতিবেদন দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজও (বুধবার) আলাতুলীর স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং হচ্ছে। সেইসঙ্গে তল্লাশিও অব্যাহত আছে। এখন পর্যন্ত তাদের বিষয়ে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।’
র্যাব-৫-এর অধিনায়ক বলেন, ‘নদীতে এখনও পানি থাকায় হেঁটে যাতায়াতের সুযোগ নেই। তবে যাতায়াতের অন্য মাধ্যম রয়েছে। জায়গাটি নির্জন বলে গোয়েন্দা নজরদারিও কম। আবার জঙ্গি বিষয়ে মানুষ এখন অনেক সচেতন। সবকিছু বিবেচনা করেই তারা নির্জন এই এলাকাটিতে আস্তানা গড়ে তুলেছিল।’
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহাবুবুল আলম বলেন, ‘পদ্মার চর আলাতুলীতে কয়েক হাজার বসতি রয়েছে। ওই চরে কারা বসতি গড়েছে বা বহিরাগত কেউ সেখানে অবস্থান করছে কিনা অথবা কোথাও গোলাবারুদ মজুদ রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে এ অভিযান শুরু হয়েছে। একইসঙ্গে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের বিষয়ে চরবাসীকে সচেতন করা হচ্ছে এ অভিযানের মাধ্যমে।’