সেতুর অভাবে বিপাকে ৫ গ্রামের মানুষ

Photo-04খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা উপজেলা সদরের ধলিয়া খালের ওপর সংযোগ সেতুর অভাবে বিপাকে ৫ গ্রামের হাজারও মানুষ। তবে শুষ্ক মৌসুমে যাতায়াতের সুবিধার্থে গ্রামবাসীরা মিলে স্বেচ্ছাশ্রমে খালের ওপর বালির বস্তা ও কাঠ দিয়ে তৈরি করছেন অস্থায়ী সেতু।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সেতুর অভাবে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের বড়ঝালা, মোহাম্মদপুর, মিস্ত্রিপাড়া, আটবাড়িসহ পাঁচটি গ্রামের সাত হাজার মানুষ দুর্ভোগে আছেন। উপজেলা সদর থেকে ওই গ্রামগুলোর দূরত্ব মাত্র এক কিলোমিটার হলেও ধলিয়া খালের ওপর সংযোগ সেতু না থাকায় বর্ষাকালে বিছিন্ন হয়ে যায় পাঁচটি গ্রাম।

জানা গেছে, ১৬ বছর আগে মাটিরাঙা উপজেলা সদর পৌরসভা হলেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এসব গ্রামগুলোতে। স্থানীয় পৌর কাউন্সিলরের উদ্যোগে খালের ওপর একটি সাঁকো থাকলেও সেটি বর্ষার সময় পানির নিচে থাকে। শুষ্ক মৌসুমে তাই স্থানীয়দের উদ্যোগে চলাচলের জন্য ধলিয়া খালের ওপর অস্থায়ী সেতু নির্মাণে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছেন গ্রামবাসী। এই কর্মযজ্ঞে অংশগ্রহণ করেছেন ২-৩ গ্রামের শতাধিক মানুষ।

Photo-2এলাকার বাসিন্দা আবদুল কাদের, হাসান জামিল, বরেন্দ্র ত্রিপুরা জানান, বর্ষার ৪-৫ মাস ধলিয়া খালে পাহাড়ী স্রোত থাকায় নিয়মিত স্কুল কলেজে যেতে পারে না শিক্ষার্থীরা। এছাড়া অসুস্থ রোগীদের ঠিক সময়ে হাসপাতালে নেওয়া যায় না। ফলে ওই সময় এলাকাবীর জীবনযাত্রা থমকে থাকে। এমনকি ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে পার হতে দুর্ঘটনাও ঘটে। তাই দ্রুত মাটিরাঙা সদরের সঙ্গে একটি সংযোগ সেতু স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন তারা।

বড়ঝালা গ্রামের কৃষক হেমন্ত ত্রিপুরা জানান, তাদের এলাকায় উৎপাদিত ফসল শুধু শীত মৌসুমে বিক্রি করা যায়। বর্ষা মৌসুমে উৎপাদিত ফসল বিক্রি করা যায় না। কারণ সেতু না থাকায় পণ্য বাজারে নেওয়া সম্ভব হয় না।

Photo-03অন্য এলাকার বাসিন্দা আবদুল হক জানান, খালের ওপারে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে। বর্ষার সময় অধিকাংশ অভিভাবক সন্তানদের স্কুলে পাঠান না। যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় বিদ্যালয়ে শতভাগ উপস্থিতি হয়না।

মাটিরাঙা পৌরসভার কাউন্সিলর আবুল হাশেম ভুঁইয়া বলেন, ‘সংযোগ সেতুর অভাবে কৃষকরা উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে পারেন না। ফলে তারা পণ্যের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই দ্রুত ধলিয়া খালের ওপর একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণ করতে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

Photo-01মাটিরাঙা পৌর যুবলীগের সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বিভিন্ন সরকারের আমলে সেতু করে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হলেও কেউ কথা রাখেননি। তাই হাজার হাজার মানুষের কথা বিবেচনা করে একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা প্রয়োজন।’

মাটিরাঙা উপজেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল হক বলেন, ‘স্থানীয় সংসদ সদস্যের চাহিদার ভিত্তিতে ধলিয়া খালের ওপর সংযোগ সেতু নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’

খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে মাটিরাঙা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভা মেয়র এবং এলজিইডির প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলেছি। চলতি বছরেই সেতুটি নির্মাণ করা হবে বলে স্থানীয় প্রশাসন আমাকে জানিয়েছে।’

আরও পড়ুন:
মৌসুমেও ফেনীতে সবজির দাম চড়া