নারায়ণগঞ্জে হকার বসার সিদ্ধান্ত

ফুটপাতে হকার বসা নিয়ে শামীম ওসমান ও আইভীর সমর্থকদের সংঘর্ষনারায়ণগঞ্জ শহরের প্রধান সড়ক ‘বঙ্গবন্ধু সড়ক’-এ কোনও হকার বসতে পারবে না। তবে সিরাজউদ্দৌলা সড়ক, সলিমুল্লাহ সড়ক, চেম্বার রোড ও খানপুর হাসপাতালের সামনে সড়কে সাময়িক সময়ের জন্য হকার বসতে পারবে। বুধবার (১৬ জানুয়ারি) জেলার পুলিশ সুপার মঈনুল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ‘বিকাল পাচঁটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত হকাররা এসব স্থানে কেনাবেচা করতে পারবেন।’  

পুলিশ সুপার আরও জানান, ‘বুধবার দুপুরে  সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর সঙ্গে জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি হিসেবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন হায়দার ও পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক হোসেনের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।’   

নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মঈনুল হক জানান, ‘সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী সঙ্গে মিটিংয়ে হকারদের বসার স্থানের বিষয়টি নিয়ে কথা হয়। এসময় মেয়র আইভী জানান, নগরীর প্রধান সড়ক বঙ্গবন্ধু সড়ক ছাড়া অন্য সড়কে হকার বসলে সিটি করপোরেশনের কোনও আপত্তি নেই।’ সাময়িক সময়ের জন্য হকারদের শীতের কাপড় বেচাকেনার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।  

হকার্স আন্দোলনের নেতা ও কমিউনিস্ট পার্টির নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি হাফিজুল ইসলাম জানান, বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে জেলা প্রশাসক রাব্বি মিয়া  হকার নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে জেলা প্রশাসক জানান,  জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও সিটি করপোরেশন বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে-  বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) বিকাল পাচঁটা  থেকে রাত দশটা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সড়ক ছাড়া চেম্বার রোড, কালিবাজার সিরাউদ্দৌলা সড়ক, সলিমুল্লাহ সড়ক ও খানপুর হাসপাতালের সামনের সড়কে হকার বসতে পারবে। ফেব্রুয়ারির ২৮ তারিখ পর্যন্ত সাময়িকভাবে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে।   

উল্লেখ্য, ফুটপাতে হকার বসানোকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) বিকালে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া এলাকায় সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ও মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় মেয়র আইভী, সাংবাদিকসহ শতাধিক মানুষ আহত হন। এদিন দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষের ঘটনায় পুরো এলাকা পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ দুই শতাধিক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে।

এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, নগরীর সৌন্দর্য অক্ষুণ্ন রাখতে সড়কের ফুটপাথগুলো হকারমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেন মেয়র আইভী। এই সিদ্ধান্তে হকাররা প্রতিবাদ জানালে তাদের সমর্থন জানান শামীম ওসমান। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বক্তব্য-পাল্টা বক্তব্য রাখার ঘটনাও ঘটে। সবশেষ মেয়র আইভী নগরীর ফুটপাথ থেকে হকারদের উচ্ছেদের ঘোষণা দিলে তাদের আবারও ফুটপাথে বসানোর ঘোষণা দেন শামীম ওসমান। এর প্রতিবাদে নগর ভবন থেকে পায়ে হেঁটে মেয়র আইভী তার নেতাকর্মীদের নিয়ে মিছিলসহ চাষাঢ়া এলাকায় আসেন। তারা মুক্তি জেনারেল হাসপাতালে সামনে এলে শামীম ওসমানের সমর্থক ও হকাররা তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ও গুলি ছোড়ে।