নারায়ণগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ দিনেও মামলা হয়নি

নারায়ণগঞ্জ সংঘর্ষের ঘটনা (ফাইল ছবি)

নারায়ণগঞ্জে ফুটপাতে হকার বসানোকে কেন্দ্র করে সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ও সিটি মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় গত চার দিনেও কোনও মামলা হয়নি। ওই সংঘর্ষে যেসব বৈধ-অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার ও প্রদর্শন করা হয়েছে সেগুলো শনাক্ত বা উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় এখনও কেউ আটক হয়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।  

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান জানান,ভিডিও ফুটেজ দেখে ঘটনায় জড়িত অস্ত্রধারীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান চলছে।

এদিকে শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) ছুটির দিনে হকাররা শহরের প্রধান সড়ক ‘বঙ্গবন্ধু সড়ক’-এ না বসলেও সংযোগ সড়কগুলোতে বিকাল থেকে দোকান বসিয়েছে। হকার সমিতির সভাপতি রহিম মুন্সি এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘হকাররা আপাত শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে না বসলেও অন্যান্য স্থানে বসেছে। আমাদের হকাররা কয়েকটি দলে বিভক্ত। তারা সবাই আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। কেউ কেউ সমিতির নির্দেশ উপেক্ষা করে নিজ দায়িত্বে বঙ্গবন্ধু সড়কে বসার চেষ্টা করেছে।’

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান জানান- জেলা প্রশাসন,পুলিশ এবং সিটি করপোরেশনের সিদ্ধান্তের বাইরে কাউকে বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাতে বসতে দেওয়া হবে না। বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাত হকার মুক্ত রাখা হবে। সেখানে পুলিশের টহল ডিউটি বাড়ানো হয়েছে। কোনও হকার সিদ্ধান্ত অমান্য করলে তাকে আটক করা হবে।

উল্লেখ্য, ফুটপাতে হকার বসানোকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) বিকালে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া এলাকায় সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ও মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় মেয়র আইভী, সাংবাদিকসহ শতাধিক মানুষ আহত হন। এদিন দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষের ঘটনায় পুরো এলাকা পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ দুই শতাধিক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে।

এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, নগরীর সৌন্দর্য অক্ষুণ্ন রাখতে সড়কের ফুটপাথগুলো হকারমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেন মেয়র আইভী। এই সিদ্ধান্তে হকাররা প্রতিবাদ জানালে তাদের সমর্থন জানান শামীম ওসমান। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বক্তব্য-পাল্টা বক্তব্য রাখার ঘটনাও ঘটে। সবশেষ মেয়র আইভী নগরীর ফুটপাথ থেকে হকারদের উচ্ছেদের ঘোষণা দিলে তাদের আবারও ফুটপাথে বসানোর ঘোষণা দেন শামীম ওসমান। এর প্রতিবাদে নগর ভবন থেকে পায়ে হেঁটে মেয়র আইভী তার নেতাকর্মীদের নিয়ে মিছিলসহ চাষাঢ়া এলাকায় আসেন। তারা মুক্তি জেনারেল হাসপাতালে সামনে এলে শামীম ওসমানের সমর্থক ও হকাররা তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ও গুলি ছোড়ে।