নেশা নিতে বাধা: বড় ভাইয়ের ওপর প্রতিশোধ নিতে ছোট ভাইকে খুন

বরিশাল

বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সাইয়ুম বিশ্বাস ফাহিম (১১)-কে শ্বাসরোধ করে হত্যার কথা স্বীকার করেছে মিলন ফকির নামের এক মাদকসেবী। বুধবার ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে মিলন।

 পুলিশ জানায়, ফাহিমের বড় ভাই সাঈদ  মিলনকে মাদক গ্রহণে বাধা দেয়, তারই জের ধরে ফাহিমকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে মিলন। 

জানা যায়, উপজেলার সাতলা বাজারে মিলন ফকির নামের ওই মাদকসেবী ফাহিমকে গলা টিপে হত্যার পর তার মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। হত্যাকাণ্ডের তিন দিন পর মঙ্গলবার রাতে আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগদা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে সে।

নিহত ফাহিম বিশ্বাস (১১) উজিরপুর উপজেলার উত্তর সাতলা এলাকার মোশাররফ বিশ্বাসের ছেলে। সে উত্তর সাতলা সাইয়েদিয়া কওমি মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

উজিরপুর থানার ওসি শিশির কুমার পাল জানান, ঘাতক মিলন ফকির (১৭) পার্শ্ববর্তী আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগদা এলাকার আলম ফকিরের ছেলে। সাতলা বাজারে তার নানাবাড়ি। সেখানে বেড়াতে গিয়ে ফাহিমদের বাড়ির পাশে নেশা করত মিলন। মিলন ফকিরকে নেশা করতে দেখে বাধা দেয় ফাহিমের বড় ভাই সাঈদ বিশ্বাস। তার তিরস্কারের মুখে মিলনকে সেখান থেকে চলে যেতে হয়। এর জের ধরে মিলন গত ২৭ এপ্রিল রাতে সাতলা বাজারের একটি ভবনের ছাদে কথা বলার জন্য ফাহিমকে ডেকে নিয়ে যায় এবং সেখানে তাকে মারধর করে। নিজেকে বাঁচাতে ফাহিম এক পর্যায়ে মিলনকে ধাক্কা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ফাহিমকে গলা টিপে হত্যা করে মিলন। হত্যার পর ফাহিমের স্মার্টফোনটি নিয়ে পালিয়ে যায় সে। ২৮ এপ্রিল ঘটনাস্থল থেকে ফাহিমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ২৯ তারিখ সাইয়ুমের বাবা মোশাররফ বিশ্বাস থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।

ওসি শিশির কুমার পাল আরও জানান, তদন্তের এক পর্যায়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে ফাহিম হত্যায় মিলনের সম্পৃক্ততা পায় পুলিশ। এরপর মিলনের মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে তার অবস্থান নিশ্চিত করা হয়। সে অনুযায়ী আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগদা এলাকার নিজ বাড়ি থেকে মিলনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মিলন ফকিরকে বুধবার দুপুরে বরিশাল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হলে সে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। আদালতের আদেশে মিলন ফকিরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।