রাজশাহীতে জাত ভেদে গাছ থেকে আম নামানো যাবে যেসব তারিখে

গাছ থেকে আম পাড়া (ফাইল ছবি)বাজারে ছাড়ার জন্য আগামী ২০ মে’র আগে রাজশাহীতে গাছ থেকে আম নামানো যাবে না। গুটি জাতের গাছপাকা আম ছাড়া অন্য সব জাতের আমের জন্য এই নির্দেশ প্রযোজ্য হবে। আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা মিলে আম পাড়ার এই দিন ঠিক করেছেন। সব চাষি ও ব্যবসায়ীকে এই নির্দেশ মেনে চলতে বলা হয়েছে। অন্যান্য জাতের আম পাড়ার জন্যও তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। 

বুধবার দুপুরে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রাজশাহী জেলা প্রশাসক এসএম আবদুল কাদেরের সভাপতিত্বে সিদ্ধান্ত হয়, গাছে পাকলেই গুটি আম পাড়তে পারবেন চাষিরা। তবে ২০ মে’র আগে গাছ থেকে নামানো যাবে না গোপালভোগ জাতের আম। হিমসাগর, খিরসাপাত ও লক্ষণভোগ নামানো যাবে না ১ জুনের আগে। আর ল্যাংড়া নামানো যাবে জুনের ৬ তারিখের পর থেকে। এছাড়া আম রুপালি ও ফজলি ১৬ জুন এবং আশ্বিনা জাতের আম ১ জুলাইয়ের আগে চাষিরা গাছ থেকে পাড়তে পারবেন না।

সভায় জেলা প্রশাসক এসএম আবদুল কাদের বলেন, ‘রাজশাহীর আমে কখনও ফরমালিন মেশানো হয় না। কৃত্রিমভাবেও আম পাকানো হয় না। কিন্তু যখন বাজারে অনেক আগে কিংবা পরে আম পাওয়া যায়। তখন অনেকেই মনে করেন যে আমে কেমিক্যাল দেওয়া আছে। ক্রেতাদের এই ভীতি দূর করতেই আম পাড়ার একটা নির্দিষ্ট সময় ঠিক করে নেওয়া হলো। এতে কেউ মনে করবেন না যে, এই আম এখন গাছে থাকার কথা নয়। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় সবার আগে চাষিদের স্বার্থ রক্ষা করা হলো।’

তিনি জানান, বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী আম নামানো হচ্ছে কি না তা মনিটরিং করা হবে। এজন্য প্রতিটি উপজেলার নির্বাহী অফিসার, উপজেলা চেয়ারম্যান ও কৃষি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে মনিটরিং কমিটি গঠন করা হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ের আগে আম পাড়া হলে এই কমিটি ব্যবস্থা নেবে। আর চাষি ও ব্যবসায়ীদের সব সুযোগ-সুবিধা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন কাজ করবে। এজন্য জেলার সবচেয়ে বড় আমের হাট পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর বাজারে অস্থায়ী অফিস খুলবেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। বানেশ্বরে থাকা বিভিন্ন ব্যাংকের শাখাগুলো শনিবারও খোলা থাকবে। এছাড়া জেলা প্রশাসন থেকে তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিনে আট ঘণ্টা করে ২৪ ঘণ্টা সেখানে দায়িত্ব পালন করবেন। আর আম পরিবহনে যেন কোনও সমস্যা না হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করবে পুলিশ।

সভায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুব্রত পাল, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুর রাজ্জাক খান, রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জিএম মোরশেদুল বারী, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক দেব দুলাল ঢালি, বিএসটিআই’র রাজশাহীর উপপরিচালক খাইরুল ইসলাম, চাষী জিল্লুর রহমান ও ব্যবসায়ী আজমল হোসেনসহ অংশগ্রহণকারী অনেকেই বিভিন্ন মতামত তুলে ধরেন।