হাসামদিয়া গণহত্যা দিবস: ৪৭ বছরেও স্বীকৃতি পায়নি শহীদদের পরিবার

হাসামদিয়া গ্রামে বেসরকারি উদ্যোগে নির্মিত স্মৃতিফলক (ছবি- সংগৃহীত)আজ ১৬ মে। হাসামদিয়া গণহত্যা দিবস। ফরিদপুরের বোয়ালমারীর উপজেলার এ গ্রামটিতে ১৯৭১ সালের এই দিনে ৩৩ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে নির্মমভাবে হত্যা করে পাকিস্তানি বাহিনী। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় হাসামদিয়া বাজারসহ গ্রামের শতাধিক ঘর-বাড়ি। অথচ স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরও স্বীকৃতি পায়নি ওই শহীদদের পরিবারগুলো। সরকারি উদ্যোগে এখানে নির্মিত হয়নি কোনও স্মৃতিস্তম্ভ।

শহীদদের স্বীকৃতি দিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী ও শহীদদের পরিবার।

ফরিদপুরের তৎকালীন মুজিব বাহিনীর কমান্ডার ও সাবেক এমপি শাহ মো. আবু জাফর বলেন, ‘১৯৭১ সালের ১৬ মে ভোরে যশোর সেনানিবাস থেকে মেজর নেওয়াজের নেতৃত্বে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর তিন শতাধিক সদস্য ঢুকে পড়ে হাসামদিয়া গ্রামে। সেদিন আমাকে হত্যা করতে এসে না পেয়ে তারা কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে গ্রামের নিরীহ মানুষের উপর নির্বিচার গণহত্যা, অগ্নিসংযাগ, লুটপাট ও নারী ধর্ষণ চালায়।’

তিনি জানান, স্থানীয় রাজাকার আলবদরদের সহায়তায় হানাদার বাহিনী হাসামদিয়া বাজার পুড়িয়ে দেয়। এরপর তারা হিন্দু অধ্যুষিত রাজাপুর ও রামনগর গ্রামে ঢুকে অর্ধশত নারীকে ধর্ষণ করে ও ওই এলাকার ৩৩ জন হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষকে কুমার নদের পাড়ে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে। এভাবই তারা আশে-পাশে আরও ৫টি গ্রামে চালায় ধংসযজ্ঞ।

শাহ মো. আবু জাফর দাবি জানিয়ে বলেন, ‘এই গণহত্যায় শহীদ পরিবারের সদস্যরা আজও পায়নি রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও স্বীকৃতি। আমরা ব্যক্তি উদ্যোগে একটি স্মৃতিফলক নির্মাণ ও দিবসটি পালন করলেও সরকারিভাবে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বঙ্গবন্ধু জীবিত থাকা অবস্থায় ২ হাজার করে টাকা দিয়েছিলেন নিহত পরিবারগুলোকে, তার মত্যুর পর আর কেউ খোঁজ নেয়নি এদের।’

স্থানীয় কলেজের অধ্যক্ষ মো. লিয়াকত হোসেন জানান, অতীতে শহীদ পরিবার ও স্থানীয়দের পক্ষ থেকে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলে মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করা হলেও এখন পর্যন্ত শহীদদের নামাঙ্কিত স্মৃতিস্তম্ভ, শহীদদের স্বীকৃতি বা সরকারি উদ্যোগে স্মরণ অনুষ্ঠান করা হয়নি।