খুলনায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ ২, অস্ত্রসহ আটক ৬

ব্যবহৃত রাবার বুলেটের খোসাখুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) সাত নম্বর ওয়ার্ডে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা ঘটেছে। শনিবার (১৯ মে) রাতের এ ঘটনায় ওয়ার্ড আ. লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনাম মুন্সী ও বাবু নামে দুজন রাবার বুলেট বিদ্ধ হয়েছেন।

এ ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে। বর্তমানে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে র‌্যাব ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

আটক ব্যক্তিরা হলেন কাশিপুর এলাকার সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে মাহফুজ (২২), রাজা সর্দারের ছেলে পাপ্পু সর্দার (২১), আজিজুর রহমানের ছেলে খালিদ বিন ওয়ালিদ (২৬), মনির হোসেনের ছেলে মো. সুমন (২৭), শেখ বাদশার ছেলে মো. সানি (২৮) ও রফিকুল ইসলামের ছেলে  ইমরান হাসান (২৪)।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া উইংয়ের প্রধান) সোনালী সেন জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় সংঘর্ষ হয়েছে। শনিবার (১৯ মে) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় খালিশপুর থানার কাশিপুর পদ্মা-মেঘনা গেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

গুলিবিদ্ধ এনাম মুন্সীপুলিশ জানায়, নবনির্বাচিত কাউন্সিলর সুলতান মাহমুদ পিন্টু গ্রুপ ও আওয়ামী লীগ মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থী শেখ সেলিম আহমেদ গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে ইমরান নামে একজনের কাছ থেকে ৭.৬২ বোরের একটি পিস্তল জব্দ করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা বিভাগীয় ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এনাম মুন্সী ইফতার শেষে হাজিবাড়ি সংলগ্ন মসজিদে নামাজ পড়তে যাচ্ছিলেন। এ সময় ৩/৪ জন যুবক এনাম মুন্সীকে হামলা করে।

এনাম মুন্সী জানান, অবস্থা বেগতিক দেখে প্রাণরক্ষার জন্য তিনি দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় তাকে লক্ষ্য করে কয়েকটি রাবার বুলেট ছোড়া হয়।

পুলিশ জানায়, মেঘনা গেট সংলগ্ন মৃত ওয়াদুদ মুন্সী নামে সাবেক এক পুলিশ সদস্যের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তার বাড়িঘর ভাঙচুর করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাত নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিপক্ষ দুটি গ্রুপ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।

ঘটনাস্থলে র‌্যাবের সদস্যরাএলাকাবাসী জানান, সন্ধ্যা সাতটার দিকে ১০/১৫ রাউন্ড গুলি, ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ হয়। এতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। এনাম মুন্সী গুলিবিদ্ধ হওয়ার প্রতিবাদে সাত নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী  লীগের নেতাকর্মীরা রাত ৯টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এ সময় র‌্যাব-৬ সদস্যদের হস্তক্ষেপে মিছিল বন্ধ হয়। বর্তমানে ওই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

স্থানীয় বাসিন্দা আজমল  আলী বলেন, ‘সন্ধ্যার পর সাত নম্বর ওয়ার্ডে দফায় দফায় গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। সংবাদ পেয়ে নগর গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে। দেশি পিস্তলসহ ইমরান নামে এক যুবক আটক হয়। এ সময় যমুনা গেট এলাকা থেকে সানি, সুমনসহ আরও পাঁচ যুবককে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে রাবার বুলেটের তিনটি খোসা উদ্ধার করা হয়।