প্রেমে ব্যর্থ হয়ে স্কুলছাত্র হামিমকে হত্যা করে তার বন্ধু ইমন

হত্যার অভিযোগে আটক ইমন 

প্রেমে ব্যর্থ হয়ে টাঙ্গাইলের সৃষ্টি একাডেমিক স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র মোহাইমিনুল ইসলাম হামিমকে (১৬) হত্যা করেছে তার বন্ধু ইমন। হত্যাকাণ্ডের ১০ দিনের মাথায় ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ইমামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নওরিন মাহবুবের আদালতে শুক্রবার (২৭ জুলাই) বিকেলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় আটক ইমন। প্রেমে ব্যর্থ হয়ে সে এই হত্যকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে আদালতকে জানায়।

ইমন নাগরপুর উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের পাছ ইড়তা গ্রামের শামছুল হকের ছেলে। বৃহস্পতিবার (২৬ জুলাই) রাতে টাঙ্গাইল শহরের আকুর টাকুর পাড়া থেকে ইমনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এসময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুড়ি, নিহত হামিমের মোবাইল সেট ও সিম কার্ডও পুলিশ উদ্ধার করে।

নাগরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইন উদ্দিন জানান, টাঙ্গাইল শহরের পূর্ব আদালত পাড়ার শফিকুল ইসলামের ছেলে টাঙ্গাইল সৃষ্টি একাডেমিক স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র মোহাইমিনুল ইসলাম হামিমের সঙ্গে পাশের বাসার একটি মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ওই মেয়েকে হত্যাকারী ইমনও ভালোবাসতো।

নিহত মোহাইমিনুল ইসলাম হামিম

ইমন হামিমের প্রতি ইর্ষান্বিত হয়ে তাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার ফন্দি করে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী সে হামিমকে ফুঁসলিয়ে গত ১৬ জুলাই নাগরপুরে নিয়ে যায়। ইমন তার পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তার বাড়ি থেকে একটি ছুড়ি এনে কোমড়ের পেছনে গুজে রাখে। পরে হামিমকে পাছ ইড়তা গ্রামের মহিসগাড়া ধান ক্ষেতের দিকে নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পর ইমন পেছন দিক থেকে হামিমের গলায় ও ঘাড়ে ছুড়ি দিয়ে পরপর দুটি আঘাত করে। এরপর তার গলায় ও শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে। এরপর হামিমের মৃত্যু নিশ্চিত করে শার্ট প্যান্ট দিয়ে হাত-পা বেধে ধান ক্ষেতে ফেলে রেখে যায়। পরদিন খবর পেয়ে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় হামিমের বাবা শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে নাগরপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।

নিহতের বাবা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘একজন আসামি গ্রেফতার হওয়ার বিষয়টি জেনেছি। তবে এই হত্যাকাণ্ড একজনের পক্ষে আদৌ ঘটানো সম্ভব কিনা আমার সন্দেহ রয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আরও যারা জড়িত রয়েছে আমি তাদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় জানান, এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত মূল আসামিকে অল্প সময়ের মধ্যে আমরা গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। আসামি আদালতে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।