সাংসদের সামনে কলেজ অধ্যক্ষকে পেটালেন আ.লীগ নেতাকর্মীরা!

রাজশাহী

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে সংসদ সদস্যের সামনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এক কলেজ অধ্যক্ষকে পিটিয়ে জখম করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার (১৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় গোদাগাড়ী সরকারি কলেজে এ ঘটনা ঘটে। তবে পুলিশের দাবি, ‘মারধর নয়; হাতাহাতি হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পরিচালনা পর্ষদের সভায় গোদাগাড়ী পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওয়েজ উদ্দিন বিশ্বাসের সঙ্গে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অধ্যক্ষ আব্দুর রহমানের ওপর হামলা করেন। পরে তারা আহত অধ্যক্ষকে হাসপাতালে নিতেও বাধা দেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আজ (রবিবার) সন্ধ্যায় গোদাগাড়ী সরকারি ডিগ্রি কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভা চলছিল। সভায় সভাপতিত্ব করেন কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী। সভায় গোদাগাড়ী পৌরসভা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।

রাত ১০টার দিকে মোবাইল ফোনে অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান বলেন, ‘সভায় কলেজের নানা অনিয়মের অভিযোগের ব্যাপারে আমাকে দেওয়া কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব চাওয়া হয়। এসময় আমি আরও সময় চাই। এ ছাড়া, কলেজের যা কিছু ঘটেছে তা এমপি ও গোদাগাড়ী পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতির পরামর্শেই হয়েছে বলে জানাই। এ নিয়ে পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওয়েজ উদ্দিন বিশ্বাসের সঙ্গে আমার কথাকাটি হয়। এর একপর্যায়ে ওয়েজ উদ্দিন বিশ্বাস ও তার লোকজন আমার ওপর হামলা করে পিটিয়ে জখম করে। তাদের মারধরে আমার মাথা ফেটে যায়। পরে সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনার পর আমাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হয়। তবে সেখানে অ্যাম্বুলেন্স ঢুকতেও বাধা দেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। পরে সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর হস্তক্ষেপে আমাকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে আনা হয়।’

গোদাগাড়ী পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওয়েজ উদ্দিন বিশ্বাসের দাবি, ‘সভায় গোদাগাড়ী সরকারি কলেজের নানা অনিয়মের অভিযোগের ব্যাপারে অধ্যক্ষ আব্দুর রহমানের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছে। আমার ছেলেরা তাকে মারধর করেনি, এটা মিথ্যা কথা।’

এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি তা রিসিভ করেনি।

তবে গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভায় কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়েছে। খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে তার আগেই পরিস্থিতি শান্ত হয়।’