রবিবার (২ সেপ্টেম্বর) কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মাহমুদুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান চলছে।’
এদিকে মামলা হওয়ার পরেও কোন আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে নিহতের স্ত্রী ও মামলার বাদী দিলরুবা আক্তার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার স্বামীর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা নেওয়ার জন্য বারবার পুলিশের দোরগোড়ায় গিয়েছি, রাস্তায় আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেছি। কিন্তু পুলিশ নানা অজুহাত দেখিয়ে মামলা এজাহারভুক্ত করেনি। হাইকোর্টের নির্দেশে অবশেষে মামলা নিয়েছে পুলিশ।’ এই হত্যার সঙ্গে জড়িত সব আসামিকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, দলীয় কোন্দলের জেরে ৩১ জুলাই ময়মনসিংহ সদরের আকুয়া নাজিরবাড়ি মসজিদের পাশে মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ আজাদকে কুপিয়ে ও জবাই করে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এ হত্যার ঘটনায় ২ আগস্ট নিহত আজাদের স্ত্রী দিলরুবা আক্তার দিলু থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। হত্যার ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে ময়মনসিংহ মহানগর আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্তসহ ২৫ জনকে আসামি করা হয়। কিন্তু থানা পুলিশ মামলাটি গ্রহণ না করায় নিহতের স্ত্রী দিলরুবা আক্তারের পক্ষে আইনজীবী আফিল উদ্দিন হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন দাখিল করেন। পরে বৃহস্পতিবার (৩০ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত অবকাশকালীন বেঞ্চ মামলার এজাহার গ্রহণ করতে নির্দেশ দেন। নির্দেশ পাওয়ার পরই শুক্রবার (৩১ আগস্ট) রাতে মামলাটি এজাহারভুক্ত করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
মামলার অপর আসামিরা হলেন মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রাসেল পাঠান (৩৫), মন্তু বাবু (৩৫), শেখ ফরিদ (৩০), ফরহাদ (৩০), ফারুক (২৭), মিলন (২৪), নুরুল আমিন (২৮), আল আমিন (২৪), মেহেদি (২০), রাজিব (৩২), লিটন (২৫), রকি (২২), রানা ওরফে কদু রানা (৩০), সাগর ওরফে কলা সাগর (২২), সেলিম উদ্দিন ওরফে চওড়া সেলিম (৩৫), স্বপন (৩০), হেকিম (২৫), সাত্তার (২৩), নুরুল আমিন (২৮), আব্দুল কাদির (৩৭), রতন (২৪), সাইফুল (৩৩), শ্রাবণ (২১) ও ফজলু (২৫)।
তবে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান আসামি ময়মনসিংহ মহানগর আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ধর্মমন্ত্রীর পুত্র মোহিত উর রহমান শান্ত। নির্দেশদাতা হিসেবে এই ঘটনার সঙ্গে তার কোনও যোগসূত্র নেই দাবি করে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাকে এবং আমার পিতার রাজনৈতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্যই তৃতীয় একটি পক্ষ শেখ আজাদের স্ত্রী দিলরুবা আক্তারকে উসকে দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা নিতে তৎপরতা চালাচ্ছে।’ এরপর শেখ আজাদের হত্যাকারীদের বিচার দাবি করেছেন তিনি।