নগর ভবনে কোনও দলবাজি চলবে না: লিটন

মতবিনিময় সভায় কথা বলছেন এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটননগর ভবনে কোনও দলবাজি চলবে না বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) নবনির্বাচিত মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নগরীর উপশহরস্থ মেয়রের বাসভবনের পাশে আয়োজিত রাসিকের সাবেক ও বতর্মান কাউন্সিলর এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘দুটি জিনিস আপনাদের কাছ থেকে আমি চেয়ে নেবো। একটি হলো– জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্যই বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়েছে। তাই তাকে গ্রহণের ব্যাপারে আশা করি, কারও মধ্যে কোনও দ্বিধা থাকবে না। আর একটি হলো– উন্নয়নের প্রশ্নে নগর ভবনে কোনও দলবাজি করতে দেওয়া হবে না। এটি আমি এর আগেও বলেছি, এখনও বলছি। বিএনপি সমর্থক কাউন্সিলর বলে তাকে প্রজেক্ট দেওয়া হবে না, এটি হতে দেওয়া হবে না। বিএনপির কাউন্সিলরাও প্রজেক্ট পাবেন। যার যে ওয়ার্ডে যে উন্নয়ন করা প্রয়োজন, তা করা হবে। উন্নয়নের স্বার্থে এখানে দলমত বিচার করা হবে না।’

মেয়র বলেন, ‘আপনারা সবাই রাজনীতি বিষয়টি গেটের বাইরে রেখে নগরভবনে প্রবেশ করবেন। আবার নগরভবন থেকে বের হয়ে রাজনীতির কথা বলবেন। এতে আমার কোনও আপত্তি থাকবে না। কিন্তু নগর ভবনে রাজনীতি করবেন না। নগর ভবনের দাফতরিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে আমাদের কাজ করতে হবে। কাউন্সিলদের আমরা টিম করে দেবো, তারা মানসম্মতভাবে উন্নয়নমূলক কাজগুলো করবেন।’

মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ‘গত পাঁচ বছর রাজশাহীতে কোনও জায়গায় কাজ হয়নি। রাস্তা-ঘাটের অবস্তা ভাল না। আমার রেখে আসা প্রকল্পগুলো আলোর মুখ দেখেনি। থেমে থাকা এসব প্রকল্প সচলসহ ব্যাপক উন্নয়ন করা হবে।’

মেয়র লিটন আরও বলেন, ‘মেয়রের কাজ নয়, এমনও অনেক কাজ আমি করবো। যেমন রাজশাহী টু ঢাকা বিরতীহীন ট্রেন চালু করা। এ ব্যাপারে এর মধ্যেই রেলমন্ত্রীর সঙ্গে কথা চূড়ান্ত হয়েছে। তিনি আমাকে ডিও লেটার দিতে বলেছেন। তিনি বলেছেন, নতুন কোচ, নতুন ইঞ্জিন আসলে রাজশাহী-ঢাকা রুটে বিরতীহীন ট্রেন চালু করে দিবেন। এছাড়া আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর রাজশাহী থেকে কলকাতা সরাসরি ট্রেন চলাচল বাস্তবায়ন করা হবে। একইভাবে অনেক কাজ করবো, যেগুলো আমাদের না। কিন্তু রাজশাহীর সন্তান হিসেবে কাজগুলো আমাদের করতে হবে।’

মেয়র বলেন, ‘বাংলাদেশের মধ্যে রাজশাহী ইতোমধ্যে একটা ভালো স্থান পেয়েছে। সুন্দর শহর, আলোয় ঝলমলে শহর, পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ঝকঝকে-তকতকে সবুজ শহর, স্বাস্থ্যসেবার শহর, সবই করে রেখে এসেছিলাম। কিন্তু গত পাঁচ বছরে সবই প্রায় নষ্টের পথে। বিবর্ণ শহর, ভাঙাচোরা রাস্তাঘাট-এই অবস্থায় তো আমি রেখে আসেনি। এখন আগামী পাঁচ বছরে ১৫ বছরের কাজ করতে হবে। এটি করতে আমি রাজি আছি। এজন্য সবার সহযোগিতা চাই।’

সিটি করপোরেশনের রাজস্ব বাড়ানো হবে জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘এখন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের বার্ষিক আয় প্রায় ৫০ কোটি। এত পুরোনো একটি সিটির বার্ষিক আয় এত কম, তা হতে পারে না। আমাদের দক্ষ কাউন্সিলর ও কর্মকর্তারা আছেন, তারা খুঁজে বের করবেন কীভাবে সিটি করপোরেশনের আয় বাড়ানো যায়। পাঁচ বছর পর যখন আমি দায়িত্ব ছাড়াবো, তখন সিটি করপোরেশনের বার্ষিক আয়ের টার্গেট হবে ২০০ কোটি টাকা।’

কাউন্সিলর শরিফুল ইসলাম বাবুর সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন, রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের পত্নী ও মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি শাহীন আকতার রেনী, রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মোমিন, কাউন্সিলর আব্দুল হামিদ সরকার টেকন, মাহাতাব চৌধুরী প্রমুখ।