স্ত্রীর মামলায় জাতিসংঘ কর্মকর্তা কারাগারে

রাজশাহী

রাজশাহীতে স্ত্রী নির্যাতনের মামলায় জাতিসংঘ মানবাধিকার রিফিউজি হাই-কমিশনের কর্মকর্তা এবিএম সাদিকুর রহমান সোহেলকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বুধবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল-১ এর মনসুর আলম তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোজাফর হোসেন এ খবর নিশ্চিত করেন।

সাদিকুর রহমান সোহেল বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জের মজিবুর রহমানের ছেলে।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোজাফর হোসেন বলেন, ‘বুধবার দুপুরে রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল-১ –এ আত্মসমর্পণ করেন এবিএম সাদিকুর রহমান সোহেল। এসময় তার আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। তবে বিচারক মনসুর আলম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।’

বাদীপক্ষের আইনজীবী সরকার হাসিবুল আলম বলেন, ‘গত রোজার ঈদের দিনে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে পিটিয়ে আহত করেন সোহেল। এ নিয়ে তার স্ত্রী বাগমারা থানায় মামলা করেন। এই মামলায় আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছিলেন। পরে উচ্চ আদালত তাকে নির্ধারিত হাজিরার দিনে রাজশাহীর আদালতে আত্মসমর্পণ করে স্থায়ী জামিন চাইতে বলেন। সোহেল আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠান।’

হাসিবুল আলম আরও বলেন, ‘সোহেলের অতীতের রেকর্ড খারাপ। অতীতে তিনি অনেকবার স্ত্রীকে নির্যাতন করেছেন। তিনি বড় মানবাধিবার সংস্থায় কাজ করলেও নিজের পরিবারের কাছেই মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন। বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে তিনি জড়িত। বিভিন্ন নারীর সঙ্গেও তার সম্পর্ক। এসব অভিযোগ মামলার এজাহারেই আছে।’

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার পাকুড়িয়া গ্রামের নুর হোসেনের মেয়ে সানজিদা মুনমুন লিপির সঙ্গে সাদিকুর রহমান সোহেলের বিয়ে হয়। এর পর ২০১৩ সালে সোহেল জাতিসংঘ মানবাধিকার রিফিউজি হাই-কমিশনে সহযোগী ওয়াস অফিসার হিসেবে যোগ দেন। এরই মধ্যে সানজিদা একটি ছেলে সন্তানেরও জন্ম দেন।

মামলার বাদী সানজিদা মুনমুন লিপি বলেন, ‘জাতিসংঘে চাকরি পেয়ে সোহেল মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। পরকীয়ায়ও জড়ায়। একইসঙ্গে প্লট ও গাড়ি কেনার জন্য আমার কাছে যৌতুক দাবি করে। আমি তা দিতে না পারলে আমাকে নির্যাতন করা শুরু করে। গত ঈদুল ফিতরের দিন (১৬ জুন) সোহেল আমাকে ব্যাপক নির্যাতন করে। আর তার এ কাজে সহযোগিতা করে সাদিকুরের দুই বোন, এক ভাই ও বাবা। এ নিয়ে গত ৯ জুলাই আমি মামলা করি। এ মামলায় হাজিরা দিতে গেলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠান।’