রবিবার (২১ অক্টোবর) শেহালাবুনিয়ার খ্রিস্ট ধর্মের প্রধান গির্জার পাশে তাকে সমাহিত করা হবে। তার অন্তিম ইচ্ছায় মোংলার শেহালাবুনিয়ায় সমাহিত হচ্ছেন ফাদার মারিনো রিগন। বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে রবিবার ভোরে মোংলায় আনা হবে মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখা বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু ইতালির নাগরিক ফাদার মারিনো রিগনকে। এর আগে ইতালি থেকে টার্কিশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে তার দেহাবশেষ আনা হবে বাংলাদেশে।
মোংলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, রবিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তেজগাঁও হেলিপ্যাড থেকে বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে করে মারিনো রিগনের মরদেহ মোংলায় আনা হবে। স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মৃতদেহ গ্রহণ করবেন। এ সময় মন্ত্রণালয়ের এবং ইতালি দূতাবাসের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকবেন। মোটর শোভাযাত্রা সহকারে মরদেহ উপজেলা প্রশাসনের মাঠে আনা হবে। এরপর উন্মুক্ত মঞ্চে তার কফিন সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণের জন্য রাখা হবে।
তিনি আরও জানান, গার্ড অব অনার প্রদানের পর সেন্ট পলস গির্জার (ক্যাথলিক চার্চ মিশন) পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে ফাদার মারিনো রিগনকে। এ জন্য তার সমাধিস্থল প্রস্তুতও করা হয়েছে।
ফাদার সম্পর্কে প্রবীণ শিক্ষানুরাগী ফ্রান্সিস সুদান হালদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ফাদার মারিনো রিগন ১৯৫৩ সালে বাংলাদেশে আসেন। এরপর ১৯৫৩ সালে আসেন মোংলা উপজেলার শেহালাবুনিয়ায়। এসেই তিনি প্রথমে সেন্ট পলস উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া তিনি ১৯৭৯ সালে মোংলা সরকারি কলেজ, বাজুয়া কলেজ, হলদিবুনিয়া স্কুল প্রতিষ্ঠায় অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেন। তিনি মোংলা উপজেলায় ১৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও গড়ে তোলেন।’
ফ্রান্সিস সুদান হালদার আরো বলেন, ‘ফাদার মারিনো ছিলেন একজন সাদা মনের মানুষ। তাকে শ্রদ্ধা জানাতে আমরা ব্যাকুল হয়ে আছি।’
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের মোংলা উপজেলার সভাপতি নুর আলম শেখ বলেন, ‘গত বছরের ২০ অক্টোবর ইতালির ভিচেঞ্চায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু ফাদার রিগন। দীর্ঘ সময়ে মোংলায় অবস্থানকালে ফাদার মারিনো রিগন ইতালীয় ভাষায় অনুবাদ করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতাঞ্জলিসহ ৪০টি কাব্যগ্রন্থ, লালন সাঁইয়ের তিনশ’ পঞ্চাশটি গান, জসীমউদদীনের নকশিকাঁথার মাঠ, সোজন বাদিয়ার ঘাট। এছাড়াও অনুবাদ করেছেন এদেশের খ্যাতিমান কবিদের অনেক কবিতা।’