সরেজমিনে দেখা যায়, বরিশাল-১ আসনে ব্যাপক পরিসরে কিংবা প্রত্যন্ত এলাকায় প্রচারণার কোনও উদ্যোগ নেই বিএনপি প্রার্থী এম জহিরউদ্দিন স্বপনের। শনিবার পর্যন্ত গৌরনদী-আগৈলঝাড়ার কোথাও ধানের শীষের পোস্টার দেখা যায়নি। তিনি স্বল্প পরিসরে গৌরনদীতেই তার প্রচার-প্রচারণা সীমাবদ্ধ রেখেছেন। প্রতীক বরাদ্দের ২ দিন পর গত ১২ ডিসেম্বর প্রথমবারের মত নির্বাচনি এলাকার গৌরনদী উপজেলায় এসে উঠান বৈঠক করেন জহির উদ্দিন স্বপন। কিন্তু তিনি এখন পর্যন্ত আগৈলঝাড়া উপজেলায় কোনও প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারেননি। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হচ্ছেন বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি। তার বাড়ি হচ্ছে আগৈলঝাড়ার সেরালে। তিনি সেরালেই বেশীরভাগ সময় অবস্থান করেন। ওই আসন থেকে একবার স্বপন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাসানাতকে পরাজিত করেছিলেন।
উজিরপুর ও বানারীপাড়া উপজেলা নিয়ে গঠিত বরিশাল-২ আসন। উজিরপুর উপজেলায় বিএনপি প্রার্থী সরদার সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টুর বাড়ি। প্রতীক বরাদ্দের একদিন পর সান্টু নির্বাচনি এলাকায় এলেও বিরামহীন প্রচারণায় তাকে দেখা যাচ্ছে না। গত শুক্রবার তিনি প্রথমবারের মত বানারীপাড়া উপজেলায় গণসংযোগ করেন। এ সময় পুলিশ তাকে বাধা দেয়। পরবর্তীতে পুলিশ তাকে থানার ভিতর নিয়ে তার প্রচারণায় কোনও বাধা না দেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে ওই উপজেলায় সান্টুর প্রচারণা নেই বললেই চলে।
উজিরপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল মাজেদ মন্নান মাস্টার দাবি করেন, উজিরপুর এবং বানারীপাড়ায় বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে স্বতস্ফূর্ত মানুষের ঢল ছিলো নজীরবিহীন। ১৪ ডিসেম্বর বিকাল থেকে প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রচারণা শুরু হয়ে গেছে।
পোস্টারিংয়ে পিছিয়ে থাকার কারণ হিসেবে মন্নান মাস্টার বলেন, প্রথম দফায় বিএনপি প্রার্থীর ছাপানো পোস্টারে ভুল হয়েছে। ওই পোস্টার বাতিল করে নতুন পোস্টার করা হয়েছে। এ কারণে একটু বিলম্ব হলেও এখন সর্বত্র ধানের শীষের পোস্টার সাটানো হচ্ছে।
জেলার ৬টি আসনের মধ্যে সবচেয়ে করুণদশা হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত বরিশাল-৪ আসনের। এই আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী নাগরিক ঐক্যের জেএম নুরুর রহমান জাহাঙ্গীর শনিবার পর্যন্ত কোনও প্রচারণায় অংশ নেননি। তার পক্ষে নাগরিক ঐক্য কিংবা বিএনপির কোন নেতাকর্মীকেও দেখা যাচ্ছে না মাঠে। এমনকি পুরো নির্বাচনি এলাকায় চোখে পড়ছে না ধানের শীষের কোন পোস্টার।
হিজলা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আলম রাজু বলেন, ‘বিএনপি কর্মী-সমর্থকরা ধানের শীষের প্রার্থীর প্রচারণা কিংবা কোনও পোস্টার না দেখে হতাশ হয়ে পড়েছেন। তৃণমূলের মানুষের প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারছেন না বিএনপি নেতারা।’
ওই আসনে মনোনয়ন বঞ্চিত সাবেক এমপি জেলা (উত্তর) বিএনপির সভাপতি মেজবাউদ্দিন ফরহাদ বলেন, ‘বরিশাল-৪ আসনে ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী নুরুর রহমান জাহাঙ্গীর শনিবার পর্যন্ত নির্বাচনি এলাকায় প্রচারণায় যাননি। নেতাকর্মী ও ভোটাররা নানা ধরনের প্রশ্ন করছে, কিন্তু কোনও সদুত্তর দিতে পারছি না।’
এই আসনের ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী নাগরিক ঐক্যের জেএম নুরুর রহমান জাহাঙ্গীর বলেন, আমি শনিবার ঢাকা থেকে বরিশাল এসেছি। নির্বাচনি এলাকার দুই উপজেলার নেতাদের সঙ্গে সভা করে রবিবার আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করবো।
বিভিন্ন জায়গায় পোস্টারিং করা হয়েছে এবং সর্বত্র পোস্টার পাঠানো হয়েছে দাবি করে নুরুর রহমান বলেন, ‘আমার পোস্টার উঠিয়ে ফেলা হচ্ছে। শুক্রবার রাতেও বিদ্যানন্দপুর এলাকায় ধানের শীষের পোস্টার উঠিয়ে ফেলা হয়েছে। ওইসব জায়গায় আবারও পোস্টারিং করা হয়েছে। প্রচারণায় কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও ভোটের মাঠে এগিয়ে যাবো।’