গোপালগঞ্জের ৩টি আসনে এখনও প্রচারণায় নামেনি বিএনপি

গোপালগঞ্জএকাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনি প্রচারণায় গোপালগঞ্জের ৩টি আসনে এখনও মাঠে নামেনি বিএনপি। জেলার কোথাও তাদের প্রচার-প্রচারণা চোখে পড়েনি। নির্বাচনি এলাকায় নেই কোনও পোস্টার ও মাইকিং। স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, দলীয় মনোনয়ন পাওয়া-না পাওয়া নিয়ে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা নাখোশ রয়েছেন। আর এ করণেই দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচরণায় নামেননি তারা।

জেলা যুবদলের সভাপতি সিকদার শহিদুল ইসলাম লেলিন জানান, এতোদিন প্রচারণায় না নামলেও রবিবার (১৬ ডিসেম্বর) থেকে যুবদলের নেতাকর্মীরা দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় নামবেন।’ তিনি বলেন, ‘গোপালগঞ্জ-১ আসনে এখনও নেতাকর্মীরা দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় নামিনি। তবে, গোপালগঞ্জ-৩ আসনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে নেতাকর্মীরা সীমিত আকারে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম. মুনসুর আলী জানান, গোপালগঞ্জ-২ আসনে সিরাজুল ইসলাম সিরাজকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়। তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন কোনও নেতাকর্মীকে জানাননি। সে তার একজন কর্মচারীকে দিয়ে গোপনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বাচাই-যাচাই ও প্রতীক বরাদ্দের সময়ও তিনি আসেননি ও আমাদের কিছু বলেননি।’ তিনি এখন কোথাও প্রচার-প্রচারণায় নামেননি বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।

এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, ‘প্রার্থী নির্বাচনে তৃণমূলের মতামতকে প্রধান্য না দেওয়ায় আমরা গোপালগঞ্জ-২ আসনে নির্বাচন বয়কট করেছি।’

জেলা বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সিরাজ জানান, তিনি বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। তবে, পোস্টার ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে প্রচার না চালানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘খুব দ্রুই পোস্টার লাগানো হবে এবং মাইকিং করে প্রচার শুরু করা হবে।’

প্রসঙ্গত, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গোপালগঞ্জ-১ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন পান এফ. ই শরফুজ্জামান জাহাঙ্গীর, গোপালগঞ্জ-২ আসন থেকে সিরাজুল ইসলাম সিরাজ ও গোপালগঞ্জ-৩ আসন থেকে এস.এম জিলানী। এর মধ্যে এস. এম জিলানী কারাগারে রয়েছেন। আর এফ. ই শরফুজ্জামান জাহাঙ্গীর গোপালগঞ্জ-১ ও সিরাজুল ইসলাম সিরাজকে গোপালগঞ্জ-২ আসনে অবাঞ্ছিত করেন জেলা বিএনপির একাংশ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাই বিপাকে পড়েছেন গোপালগঞ্জ-১ ও গোপালগঞ্জ-২ আসনের বিএনপির প্রার্থী।

অন্যদিকে, গোপালগঞ্জের ৩টি আসন আওয়ামী লীগের ভোট দুর্গ বলে খ্যাত। এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়ে আসছেন। এই আসনে আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী তাদের জামানত হারিয়েছেন।

এবারও গোপালগঞ্জ-৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিগত ৬টি নির্বাচনে এই আসন থেকে তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। গোপালগঞ্জ-২ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। বিগত ৭টি সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হয়েছেন। গোপালগঞ্জ-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান চারটি সংসদীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিপুল ভোট জয় পেয়েছেন।