পাট কিনতে প্রয়োজন ৩৭৫ কোটি, বরাদ্দ ৩৮ কোটি

পাটকলের গুদামপর্যাপ্ত পাট সরবরাহ না থাকায় খুলনা ও যশোরের রাষ্ট্রায়ত্ত নয়টি পাটকলে উৎপাদন অব্যাহত রাখা নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। বিজেএমসি সূত্রে জানা গেছে, খুলনা অঞ্চলের নয়টি পাটকলে উৎপাদনের জন্য ১৯ হাজার মণ পাট প্রয়োজন। যার বর্তমান বাজার মূল্য ৩শ’ ৭৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থ বছরে এসব পাটকলে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৩৮ কোটি টাকা। এ টাকায় চাহিদার ১৮ ভাগ পাট কিনেছে পাটকলগুলো। যা দিয়ে ছয় থেকে সাত দিনের উৎপাদন চলবে।

এ অবস্থায় পাটকলগুলো সচল রাখতে এবং মিল ও শ্রমিকস্বার্থ রক্ষায় জাতীয় বাজেটে পাট খাতে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ, পাট মৌসুমে মিলগুলোতে অর্থছাড়, বিএমআরই, বিকল্প পাটপণ্য তৈরি, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজার সৃষ্টি ও জবাবদিহিতাসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণের দাবি শ্রমিক-কর্মচারীদের।

বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) আওতায় ৭২টি পাটকল ছিল। নানা কারণে অনেক পাটকল বন্ধ হয়ে গেছে। এখন যেনতেনভাবে টিকে আছে ২২টি পাটকল। এ পাটকলগুলোর যন্ত্রপাতি অনেক পুরনো। ফলে আগের মতো উৎপাদনে সক্ষম নয়।

বিজেএমসির বিপণন বিভাগের প্রধান মামুনুর রশিদ বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, পাটজাত পণ্য মধ্যপ্রাচ্যের সিরিয়া, ইরাক, ইরান, সুদানসহ কয়েকটি দেশে রফতানি হতো। এসব দেশে চাহিদাও ছিল অনেক। বর্তমানে ওই দেশগুলোতে আমেরিকাসহ কয়েকটি দেশের অর্থনৈতিক অবরোধ থাকায় রফতানি বন্ধ রয়েছে। অ্যান্টি ড্যাম্পিংয়ের কারণে ভারতে রফতানি বন্ধ রয়েছে। ফলে খুলনা অঞ্চলের নয়টি পাটকলের ৩শ’ কোটি টাকার উৎপাদিত পণ্য এখনও অবিক্রীত রয়েছে। মোট ২২টি পাটকলে প্রায় ৬শ’ কোটি টাকার পাটপণ্য মজুত রয়েছে। ঘানাসহ কয়েকটি দেশ পাটপণ্য কিনতে আগ্রহী হয়েছে। এর ফলে নতুন করে আশার আলো দেখা দিয়েছে।

তিনি আরও জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে পাটপণ্য বিক্রির জন্য আশির দশকে আমেরিকা, আফ্রিকাসহ পাঁচটি দেশে সেলস্ অফিস ছিল। ’৯০ দশকে সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। অফিসগুলো থাকায় আন্তর্জাতিক বাজার সৃষ্টিতে কার্যকর ভূমিকা থাকত।

খুলনার আঞ্চলিক পাটশ্রমিক লীগের নেতা মো. মুরাদ হোসেন জানান, বাজেটে পাটখাতে বরাদ্দ দেওয়াসহ নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাট খাতকে শক্তিশালী করতে পদক্ষেপ নিচ্ছেন।

ক্রিসেন্ট জুট মিলের সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন বলেন, ‘মিলের পাট, যন্ত্রাংশ, উৎপাদিত পণ্য পরিবহন খাতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়। এসব বন্ধ করতে হবে। বেলপাট না কিনে লুজপাট কিনলে মিলের অর্থ সাশ্রয় ও ভালো উৎপাদন পাওয়া সম্ভব।’ তিনি এসব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।