বগুড়ায় শিক্ষার্থীরা শুনলো মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাঁথা

অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা ও অতিথিদেরকে বই উপহার দিয়ে সম্মান জানানো হয়বগুড়া কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠে শুনলো রণাঙ্গনের বীরত্বগাঁথা। বুধবার (৩০ জানুয়ারি) জেলা প্রশাসন ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র বগুড়ার যৌথ উদ্যোগে ওই বিদ্যালয়ের মিলনায়তনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিত্তিক কর্মসূচি ‘মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনো’র অষ্টম আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনান বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র বগুড়ার উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আরশাদ সায়ীদ। মুক্তিযোদ্ধা আরশাদ সায়ীদ তার বীরত্বগাঁথায় তুলে ধরেন মাইন বিস্ফোরণে বগুড়ার সাবগ্রামে রেললাইন উড়িয়ে দিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পর্যুদস্ত করার ঘটনা, হানাদারদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে পোস্ট অফিস উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা, বিদ্যুৎকেন্দ্র উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা।তিনি শোনান  ১৯৭১-এর সঙ্গে মিশে থাকা আবেগ এবং জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার কথা। তিনি একই সঙ্গে সহযোদ্ধা বন্ধুদের হারানোর গভীর মনোবেদনার কথাও ব্যক্ত করেন।

তিনি শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নিজেদের গড়ে তুলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় রূপান্তরে যথাযথ ভূমিকা রাখতে। পিনপতন নীরবতায় শিক্ষার্থীরা শোনে এই বীর মুক্তিযোদ্ধার কথা। অনুষ্ঠানে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। অনুষ্ঠানে প্রশ্নোত্তর পর্বে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ছিলো স্বতঃস্ফূর্ত। কুইজ পর্বে প্রশ্নের উত্তর দিয়ে শিক্ষার্থীরা অর্জন করেছে মুক্তিযুদ্ধের বই পুরস্কার।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ। অন্যদের মধ্যে ছিলেন সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিট্রেট এটিএম কামরুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রধান শিক্ষক আল মামুন সরদার। অনুষ্ঠানে সঞ্চালকের ভূমিকায় ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র বগুড়ার সমন্বয়কারী এটিএম রাশেদুল ইসলাম।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে এ মহৎ আয়োজনে যুক্ত থাকতে পেরে গর্বিত অনুভব করেন এবং স্মরণ করিয়ে দেন, জাতির আগামী প্রজন্মকে সঠিক পথে গড়ে তুলতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানা ও চর্চার বিকল্প নেই। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ৩০ লক্ষাধিক শহীদ ও ৬ লক্ষাধিক মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীন বাংলাদেশ। তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করতে সকলকে সঠিক ইতিহাস জানতে হবে।’

অনুষ্ঠানের শেষে মুক্তিযোদ্ধা ও অতিথিদেরকে ফুল ও বই উপহার দিয়ে সম্মান জানানো হয়। ‘মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোন’ অনুষ্ঠানে এ পর্যন্ত বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তিন হাজার ৩৫০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে।