অভিযোগ এসেছে টেকনাফ সীমান্তে বিজিবি সদস্যরা সঠিক দায়িত্ব পালন করছে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

কক্সবাজারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের সীমান্তে মাদকের ব্যাপারে আরও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি বলেন, 'আমার কাছে অভিযোগ এসেছে টেকনাফ সীমান্তে বিজিবির সদস্যরা সঠিক দায়িত্ব পালন করছে না। তাদের প্রতি বার্তা, দায়িত্বে অবহেলা করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।' তিনি আরও বলেন, ‘মাদকের ব্যাপারে কাউকে ছাড় নয়। আগে দেশ বাঁচাতে হবে। আত্মগোপনে থাকা কোনও ইয়াবাকারবারি রেহাই পাবে না। বাংলাদেশকে ইয়াবামুক্ত করা হবে। যদি কোনও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সীমান্ত দিয়ে কোনও প্রকার মাদক ও অবৈধ নাগরিক যাতে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে। এজন্য বিজিবিকেই সবচেয়ে বেশি দায়িত্বপালন করতে হবে।’ শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কক্সবাজারের টেকনাফের পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


ইয়াবাকারবারিদের আত্মসমর্পণ

আত্মসমর্পণকারীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা আল্লাহ কাছে মাফ চান। আপনারা ভালো হয়ে যান। দেশ ও জাতির ভবিষ্যত গঠনে এগিয়ে আসুন। আর যারা এখনও আত্মসমর্পণ করেন নাই, তারা দ্রুত আইনের কাছে আত্মসমর্পণ করুন। না হলে ইয়াবা কারবারি যত বড় শক্তিশালী হোক না কেন তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।’আত্মসমর্পণ করা ইয়াবা কারবারিরা 

কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, সংসদ সদস্য শাহীন আক্তার, জাফর আলম, আশেক উল্লাহ রফিক, সাইমুম সরওয়ার কমল, জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সিরাজুল মোস্তফাসহ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। অনুষ্ঠানে ১০২ জন তালিকাভূক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করেন। এসব ইয়াবা কারবারিদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের আইজি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। এসময় ইয়াবা কারবারিরা ৩ লাখ ৫০ হাজার পিস ইয়াবা ও ৩০টি দেশীয় তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৭০ রাউন্ড তাজা কার্তুজ জমা দেন।

অনুষ্ঠানে আত্মসমর্পণকারী দুই ইয়াবা কারবারি তাদের অনুভূতি জানান। জীবনে আর কোনও দিন মাদক ব্যবসা করবেন না বলে ওয়াদা করেন এবং অন্যদেরও এই কারবারে না আসার অনুরোধ করেন।টেকনাফে ইয়াবা কারবারিদের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান

অনুষ্ঠান শেষে আত্মসমর্পণকারিদের কক্সবাজার পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং প্রত্যেকের বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা রুজু করে কারাগারে পাঠানোর কথা রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বছর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তালিকায় কক্সবাজার ও টেকনাফের ১১৫১ জন মাদক ব্যবসায়ীর নাম আসে। তারমধ্যে ৭৩ জন শীর্ষ মাদক কারবারী বা পৃষ্টপোষকের নাম আছে। তালিকার মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদিসহ তার পরিবারের ২৬ জন সদস্য রয়েছে। তাছাড়া টেকনাফ ও কক্সবাজার অঞ্চলের আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দলের নেতাদের নাম আছে।

আরও পড়ুন- 

আড়ালেই থেকে যাচ্ছে ইয়াবা ও হুন্ডির মূল গডফাদাররা!

আত্মসমর্পণের উদ্যোগের মধ্যেও দেশে ঢুকছে ইয়াবার চালান