চকবাজারে নিহতদের মধ্যে নোয়াখালীর ১০ জনের পরিচয় জানা গেছে

নোয়াখালীতে স্বজনদের আহাজারিঢাকার চকবাজারে বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতের ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় নিহতদের মধ্যে এ পর্যন্ত নোয়াখালীর ১০ জনের পরিচয় জানা গেছে। তাদের মধ্যে ৮ জনের বাড়ি সোনাইমুড়ি উপজেলার নাটেশ্বর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে, ১ জনের বাড়ি বেগমগঞ্জ ও ১ জনের বাড়ি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায়। চকবাজারে নোয়াখালীর বহু মানুষ চাকরি ও ব্যবসা উপলক্ষে অবস্থান করছিলেন বলে জানা গেছে। তাদেরকে নিয়ে স্বজনরা অনেক উৎকণ্ঠায় রয়েছেন।    

হতাহতদের খবর আসার পর থেকেই, অনেকের বাড়িতেই স্বজনদের আহাজারি করতে দেখা যায়। কেউ কেউ স্বজনদের কোনও সন্ধানই পাচ্ছেন না। তারা বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছেন, তাও জানেন না।

নাটেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির হোসেন খোকন বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, আগুনে ইউনিয়নের ঘোষকামতা গ্রামের খাসের বাড়ির মো. সাহেব আলীর দুই ছেলে মাসুদ রানা (৩০) ও মাহবুবুর রহমান রাজুর (২৮) মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের বাবা ও চাচা আবদুর রহিমের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) গিয়ে তাদের শনাক্ত করেন।’

এছাড়া, নাটেশ্বর গ্রামের মিয়ন হাজি বাড়ির ভুলু মিয়ার ছেলে মো. আলী (৫৫), একই ইউনিয়নের বটতলি গ্রামের শাহাদাত হোসেন হিরা (২৭), মির্জানগর গ্রামের মমিন উল্লাহর ছেলে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু (২৮) ও গাউছ মিয়ার ছেলে নাছির উদ্দিন (২৯), মধ্য নাটেশ্বর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মোল্লাবাড়ির সিদ্দিকুল্লাহ ও দিঘিরজান বাজারের পূর্বদিকের মিঝি বাড়ির হেলাল উদ্দিনের মারা যাওয়ার খবর নিশ্চিত করেন তিনি। 

চেয়ারম্যান কবির হোসেন খোকন জানান, স্বজনরা মাসুদ রানা, রাজু, মো. আলী, সিদ্দিকুল্লাহ ও হেলাল উদ্দিনের লাশ গ্রহণ করে নোয়াখালীর পথে রওয়ানা হয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘রাতে অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়ার পরপরই আমাদের ইউনিয়নে স্বজনরা চিন্তিত রয়েছে। পরে, সকালে মারা যাওয়ার খবর আসার সঙ্গে সঙ্গে পুরো ইউনিয়নে শোকের ছায়া নেমে আসে। এ পর্যন্ত আমরা আটজনের মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছি। এখন নিখোঁজ অনেকের হতাহতের আশঙ্কায় স্বজনরা আহাজারি করছেন।’ তিনি আরও জানান, শুধু নাটেশ্বর ইউনিয়নের প্রায় তিন হাজার মানুষ ঢাকার চকবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যবসা ও চাকরি করেন। 

সোনাইমুড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুস সামাদ জানান, চকবাজারের ঘটনায় সোনাইমুড়ি এলাকার ৩০-৩৫ জন মারা যেতে পারেন। এ পর্যন্ত তিনি ৬ জনের মৃত্যুর বিষয় নিশ্চিত করেছেন।

বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ আলম মোল্লা জানান, উপজেলার নূর মোহাম্মদের ছেলে কামাল হোসেনের (৪৫) লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন। তবে চেয়ারম্যানদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কেউ লাশ শনাক্ত করতে পারেননি।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চর এলাহি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত শহীদ উল্লাহর ছেলে জসিম উদ্দিনের (৪৫) মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘জসিম উদ্দিন চকবাজারের একটি কসমেটিক্সের দোকানে চাকরি করত। দোকান বন্ধ করে, বাসায় যাওয়ার পথে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যায় সে।’