মৃতপ্রায় নবগঙ্গার নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে চলছে খনন কাজ

চলছে নবগঙ্গার খনন কাজনবগঙ্গা নদীতে শুরু হয়েছে খনন কাজ। একসময়ের প্রমত্তা কিন্তু বর্তমানে মৃতপ্রায় নবগঙ্গার খনন কাজ শুরু হওয়ায় এ নদীকে নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে মাগুরাবাসী। নবগঙ্গার খনন কাজ আগামী জুন মাস নাগাদ শেষ হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

মাগুরা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ৪১ কোটি ৪ লাখ ২৩ হাজার টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে। ২০১৯ সালের জুন মাসে শেষ হবে এ কাজ। নবগঙ্গা নদীর সদর উপজেলা অংশে ১১ কি.মি খননের মাধ্যমে ৩০০০০ হেক্টর জমি সেচ সুবিধা পাবে। যা থেকে প্রায় ২ লাখ মেট্রিক টন অতিরিক্ত খাদ্যশস্য উৎপাদিত হবে। এছাড়াও ২০ হাজার মেট্রিক টন অতিরিক্ত মাছ চাষ সম্ভব হবে। খননের মাধ্যমে জেলার ৫টি বিল জলাবদ্ধতার হাত থেকে মুক্ত পাবে এবং জেলায় বন্যা মোকাবেলা সম্ভব হবে।

মাগুরার বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন মৃতপ্রায় এই নদীকে বাঁচানোর আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। সম্প্রতি খনন কাজের মাধ্যমে নাব্যতা ফিরিয়ে আনার  উদ্যোগে সকল মহলে স্বস্তি ফিরে এসেছে ।

প্রকৃতি বিষয়ক বেসরকারি সংস্থা ‘পল্লী-প্রকৃতি’র নির্বাহী পরিচালক শফিকুর রহমান পিন্টু বলেন, ‘নবগঙ্গা খননের ফলে মাগুরার সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত একটি পরিবর্তন আসবে। এটি যেমন সেচ সুবিধা বাড়িয়ে ফসল বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে তেমনিভাবে মাছের উৎপাদনও বাড়াবে। একই সঙ্গে নৌ-যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনেতিক সুবিধা বাড়বে। সবচেয়ে বড় কথা এটি জীববৈচিত্রতা এবং পরিবেশ রক্ষায় সহায়ক হবে।’

মাগুরার ইসলামপুরের  বাসিন্দা৮০ বছর বয়সী গোবিন্দ হালদার বলেন, ‘ছেলেবেলায় দেখতাম বিভিন্ন অঞ্চল থেকে স্টিমার আসতো এ নদীর ঘাটে। আমরাও নড়াইল,খুলনা গিয়েছি এসব স্টিমারে। প্রচুর মাছ আসতো বাজারে। আশেপাশের জমিগুলোর সেচের প্রধান অবলম্বন ছিল নবগঙ্গা। কালের বিবর্তনে এখন নবগঙ্গা মৃতপ্রায়। তবে খনন কাজ চলছে জেনে আমরা আনন্দিত। মৃত নবগঙ্গা আবার প্রাণশক্তি ফিরে পাবে।’

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বিডব্লিউডিবি) নির্বাহী প্রকৌশলী এবিএম খান মুজাহিদ বলেন, ‘নবগঙ্গা নদী খননের কাজ পূর্ণোদ্দমে চলছে। এ বছর জুন মাসে আশা করি কাজ শেষ হবে।’