ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আ.লীগ নেতার

সাতক্ষীরা জেলাসাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমানসহ দুইজনের নামে সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। চাঁদাবাজি, মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে এজাহার দাখিল করেছেন সাতক্ষীরা পৌর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও সুলতানপুর বড় বাজার মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতিরসহ সভাপতি মো. আমিনুর রহমান।

এঘটনায় ব্যবসায়ীরা সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের গ্রেফতার দাবি করেন।

আমিনুর রহমান তার এজাহারে উল্লেখ করেছেন, ‘ছাত্রলীগ নামধারী ও পদ পদবী ব্যবহারের মাধ্যমে চাঁদাবাজি, মাস্তানি, জমিজমা জবর দখল ও লুটতরাজসহ নতুন নতুন কমিটির গঠনের বিনিময়ে অবৈধ পন্থায় অর্থ উপার্জন করছে সৈয়দ সাদিকুর রহমান। গত মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দুপুরে যমুনা ব্যাংক থেকে টাকা তুলে বড় বাজার যাওয়ার সময় জেলা ছাত্রলীগের সেক্রেটারি সাদিক আমার (আমিনুর রহমান) মোবাইল থেকে জরুরি কথা বলার নাম করে আমাকে পশু হাসপাতালে ডেকে নিয়ে আসে। এসময় সাদিক আমাকে বলে আপনি বড় বাজারে ভালো ব্যবসা করেন, অথচ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন না। কোনও টাকা পয়সা দেন না। তাই সবাই মিলে আপনার কাছে ৫ লাখ টাকা ধার্য করেছি। আজ যা পারেন দেন। বাকিটা কাল সাইফুলের (২নং আসামি) কাছে দেবেন।’ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আ.লীগ নেতার

এজাহারে আমিনুর রহমান আরও উল্লেখ করেন, ‘এসময় আমি বলি আমি বৈধভাবে ব্যবসা করি এবং নিজেও আওয়ামী লীগের একজন পদধারী ব্যক্তি। সুতরাং কোনও চাঁদা দিতে পারবো না। আর এভাবে চাঁদাবাজি করে দলের ভাবমূর্তির ক্ষতি করবে না। একথা বলার সঙ্গে সঙ্গে আসামিরা আমার সঙ্গে তুই তোকারি করা শুরু করে এবং কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আমাকে মারপিট করে ও শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। আসামিরা ব্যাংক থেকে উঠানো আমার দুই লাখ টাকা কেড়ে নেয় এবং আরও তিন লাখ টাকা কালকের (বুধবার) মধ্যে দিতে বলে। আসামিরা আরও বলে, এ নিয়ে থানা কোর্ট-কাছারি করলে তোর গুষ্ঠি শুদ্ধ শেষ করে দেবো। আরও বলে, এসপি-ওসির কাছে মামলা করে লাভ হবে না। কারণ আমার চাচা এমপি আর আমিও বড় নেতা। এক পর্যায়ে আমার ডাক চিৎকারে পথচারী লোকজন এগিয়ে আসে এবং পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠায়।’

এব্যাপারে রাতে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘এজাহার পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমান সাদিকের সঙ্গে যোগযোগ করার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এদিকে মঙ্গলবার বিকালে সাতক্ষীরা শহরে ‘মাদককে না বলুন, সন্ত্রাসমুক্ত বাংলাদেশ গড়ুন’ এই স্লোগানে সন্ত্রাস ও মাদকবিরোধী বিক্ষোভ ও পথসভা করে জেলা ছাত্রলীগ। সেখানে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল ইসলাম রেজাসহ জেলা ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। এসময় সাতক্ষীরার মাদক চোরাচালানের অভিযোগ তুলে বড়বাজারের আমিনুর রহমান ও তার ছোটভাই মতিনুরের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানায় জেলা ছাত্রলীগ।