উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, জুনিয়র কনসালটেন্ট মেডিসিন, সার্জারি, গাইনি, এ্যানেসথেসিয়া, পেডিয়াট্রিক্স, অর্থপেডিক্স, কার্ডিও, চক্ষু, ইএনটি, চর্ম ও যৌন এবং সহকারী সার্জন ইনডোর, ইমার্জেন্সি, প্যাথলজিস্ট, ইউনানী ও ডেন্টাল সার্জনসহ ৩৩টি পদ রয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে কর্মরত আছেন মাত্র ৬ জন।
এর আগে মাতৃত্ব সেবার মান উন্নয়ন এবং অসহায় গরীব মানুষের কথা বিবেচনা করে ২০০০ সালে এ হাসপাতালে প্রসূতি সেবা চালু করা হয়। নিরাপদ মাতৃত্ব সেবায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় এ হাসপাতাল ২০০৫, ২০০৮ ও ২০০৯ সালে তিনবার জাতীয় পুরস্কার লাভ করে। জেলা,উপজেলার বাইরেও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সুনাম ছড়িয়ে পড়ায় দূর-দূরান্ত থেকে গরীব রোগীরা এখানে আসতে শুরু করেন। কিন্তু গত ২ বছর থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিজার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় এবং স্বাস্থ্য সেভা ভেঙে পড়ে।
উপজেলার গগনপুর গ্রামের তহমিনা বেগম বলেন, ‘আমি ৭ মাসের গর্ভবতী। আমরা দিন আনি দিন খাই। যদি আমার সিজার করা লাগে তাহলে হাসপাতালে সিজার করতে না পারলে ক্লিনিকে যাওয়ার সামর্থ নাই।’
খিরসীন গ্রামের আলতাফ হোসেন বলেন,‘দীর্ঘদিন থেকে গাইনি ডাক্তার না থাকায় প্রসূতি সেবা বন্ধ আছে। যার কারণে এলাকার প্রসূতি মা’দের নিয়ে অভিভাবকদের দুশ্চিন্তায় ভুগতে হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করার পর যদি অন্য কোথাও রেফার্ড করা হয় তখন মাঝপথে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে। জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে গাইনি ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া দরকার।’
হাসপাতালের উপ-সহকারি কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার ডা. গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘আমার ডিউটি মূলত জরুরি বিভাগে। হাসপাতালে ডাক্তার সংকটের কারণে জরুরি বিভাগের পাশপাশি বর্হিবিভাগের দায়িত্বও পালন করতে হয়। ফলে রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে আমার বাড়তি চাপ নিতে হচ্ছে।’
পত্নীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. উম্মে হানী বলেন,‘জনবল সংকটের মধ্য দিয়েও আমরা ভাল সেবা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। যে কয়জন ডাক্তার কর্মরত আছেন তাদের দিয়ে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যেতে হচ্ছে। এতে কিছুটা হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমাদের সিজারিয়ান বিভাগে কনসালটেন্ট গাইনি অবস ও সার্জন না থাকায় দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ আছে।’ এ দুটো পদে নিয়োগ হলে গোটা উপজেলায় সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন তিনি।
এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা সিভিল সার্জন ডা. মুমিনুল হক বলেন,‘পত্নীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকটে সিজার বন্ধ ২ বছর থেকে। বিষয়টি আমি মন্ত্রাণালয়ে জানিয়েছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই ডাক্তার নিয়োগ হলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’