যবিপ্রবিতে তিন শিক্ষার্থী আজীবন ও পাঁচজন এক বছরের জন্য বহিষ্কার

যবিপ্রবি

শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় তিন শিক্ষার্থীকে আজীবন ও পাঁচজনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম রিজেন্ট বোর্ডের ৫৪তম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আজীবন বহিষ্কার তিনজন হলেন- ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী হুমায়রা আজমিরা এরিন, একরামুল কবির দ্বীপ ও মো. রোকনুজ্জামান।

এক বছরের জন্য বহিষ্কার হয়েছেন শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের  স্নাতকের শিক্ষার্থী আসিফ আল মাহমুদ, মো. মোতাসসিন বিল্লাহ, ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগের মাহমুদুল হাসান শাকিব, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী নিশাত তাসনীম এবং বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী হারুন অর রশীদ।

বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে অবস্থান করতে পারবেন না এবং তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।   

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের টাঙানো র‌্যাগিংবিরোধী পোস্টার ছেঁড়া, প্রতিষ্টানের লোগোর প্রতি অবমাননা ও শিক্ষকের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ তদন্ত কমিটিতে প্রমাণিত হওয়ায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া অপরাধের মাত্রা বিবেচনা করে তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী হৃদয় রাহুত, শেখ শরীফ উদ্দীন, সুকান্ত কুমার রায়, মো. জাহিদ হাসান এবং শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সোহেল রানাকে চূড়ান্তভাবে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এর আগে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের ৫৩ তম সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় ৪ জানুয়ারি থেকে শুরু করে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত অ্যান্টি-র‌্যাগিংয়ের পোস্টার লাগানোকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবিরের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন দাখিল করে। ওই তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ও সুপারিশক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম রিজেন্ট বোর্ডের ৫৪ তম সভায় এই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। একইসাথে ক্যাম্পাস এবং ক্যাম্পেসের বাইরে র‌্যাগিংকে সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।  

এক ছাত্রীকে মানসিকভাবে হেনস্তার দায় প্রমাণিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের কর্মচারী রকিব রহমানকে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বোর্ডের সভায়।

এছাড়াও রিজেন্ট বোর্ডের সভায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বড় পরিসরে একটি স্বাস্থ্য ক্যাম্প করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এই উপলক্ষে একটি কমিটিও গঠন করা হয়। গঠিত কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সিটিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুর রশীদ এবং সদস্য সচিব করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. দীপক কুমার মণ্ডলকে। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন এবং যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।