নুসরাত হত্যা: দোষীদের শাস্তি চান আসামিদের স্বজনরাও

নুসরাত হত্যা মামলা

নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় কঠোর শাস্তি চান আসামিদের স্বজনরাও। নিজের সহপাঠীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার মতো জঘন্যতম অপরাধ যারা করেছে তাদের উপযুক্ত শাস্তি হওয়া দরকার বলে দাবি করেছেন তারা।

নুসরাতকে হত্যার জন্য ডেকে নেওয়া ও পুড়িয়ে হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত অধ্যক্ষ সিরাজের শ্যালিকার মেয়ে মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী উম্মে সুলতানা পপি। সে উপজেলার মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে। এ বিষয়ে শহীদুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অধ্যক্ষ আমার ভায়রা। তিনি যে অপকর্ম করেছেন এতে তাকে আত্মীয় পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করি। তার অপকর্মের বলি হয়েছে আমার মেয়ে। পপি শুধু তার আত্মীয় হওয়ার কারণে তাকে ওই কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। আমি আমার মেয়েরও শাস্তি চাই।’

আসামি শাহদাত হোসেন শামীমের মা বিবি ফাতেমা বলেন, ‘একজন সহপাঠীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার মতো জঘন্যতম অপরাধ যারা করেছে তাদেরকে আমার সন্তান হিসাবে দেখতে চাই না। এরকম সন্তানের মা হিসেবে নিজের পরিচয় দিতে চাই না। তাদের মৃত্যুর আগে আমার মৃত্যু হয়ে যাক। এদের উপযুক্ত শাস্তি হওয়া দরকার।’

তবে আসামি মো. জাবেদের পিতা রহমত উল্লাহ দাবি করেন, ‘জাবেদ অত্যন্ত সহজ-সরল ছেলে। সে এ ধরনের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারে না। তবে যদি কারো সহযোগিতায় হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকে তাহলে কিছুই বলার নেই ‘

উত্তর চর ছান্দিয়ায় নূর উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে বাড়ির লোকজন জানায়, জড়িত সবার কঠোর বিচার হওয়া দরকার, যেন ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর সাহস না পায়।

এদিকে নুসরাত জাহান রাফির বড় ভাই মাহমুদ হাসান নোমান বলেন, ‘সারাদেশের জনগণের এখন দাবি রাফির খুনিদের উপযুক্ত বিচার। এ হত্যাকাণ্ডের যারা পরিকল্পনাকারী, মদতদাতা ও কিলিং মিশনে জড়িত তাদের অবশ্যই কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’

এনায়েত উল্লাহ মহিলা কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ফাতেমা আক্তার মনীষা বলেন, ‘নুসরাতের ঘটনা থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের পথে সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে সবাইকে সচেতন হওয়া জরুরি। এ ঘটনায় পরীক্ষার্থীদের ভেতরে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। মানসিক চাপের কারণে আমাদের ফলাফল নিয়েও আমরা শঙ্কিত। এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কঠোর শাস্তি চাই।’

এদিকে নুসরাত হত্যায় জড়িতদের দ্রুত বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করতে এবং ভবিষ্যতে যেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, সেজন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দাবিতে এ নৃশংস ঘটনার পর থেকে ফেনীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অব্যাহত রয়েছে। আন্দোলনকারীরা জানান, এ হত্যার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া হবে।