মহামতি গৌতম বুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত এই পূর্ণিমা তিথি বৌদ্ধদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যবহ। এদিন মহামানব গৌতম বুদ্ধ জন্ম, বুদ্ধত্ব ও মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন। এ উপলক্ষে রাঙামাটি রাজবন বিহারে ধর্মীয় শোভাযাত্রা, বুদ্ধপূজা, পিণ্ডদান, প্রাতঃরাশ, পঞ্চশীল গ্রহণ, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, বুদ্ধমূর্তি দান, প্রদীপ পূজাসহ দিনব্যাপী কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এতে সমাগম ঘটে হাজারো পুণ্যার্থীর।
রাজবন বিহার মাঠে অনুষ্ঠিত ধর্মীয় সভায় আবাসিক ভিক্ষুপ্রধান শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবিরসহ অন্য ভান্তেরা পুণ্যার্থীদের ধর্মীয় দিকনির্দেশনা দেন। এ সময় রাজবন বিহার উপাসক-উপাসিকা পরিষদের সভাপতি গৌতম দেওয়ান, সাবেক উপমন্ত্রী মনি স্বপন দেওয়ানসহ দায়ক-দায়িকারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকাল ৭টায় রাজবন বিহার উপাসক-উপাসিকা পরিষদের উদ্যোগে একটি বর্ণাঢ্য ধর্মীয় শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি রাঙামাটি জেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাজবন বিহার গিয়ে শেষ হয়।
এদিকে, বুদ্ধ পূর্ণিমায় যে কোনও ধরনের নাশকতা এড়াতে রাঙামাটিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করেছে। রাঙামাটির রাজবন বিহারসহ বিভিন্ন বৌদ্ধ মন্দিরে অস্থায়ী চেকপোস্ট বসিয়ে গাড়ি ও লোকজনদের ব্যাগে তল্লাশি করা হয়েছে। এছাড়া শহরের বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বুদ্ধ পূর্ণিমায় জঙ্গি হামলার হুমকি রয়েছে-এই উড়ো খবরকে কেন্দ্র করে অন্যান্যবারের চেয়ে এবার বুদ্ধ পূর্ণিমায় পূণ্যার্থীদের উপস্থিতি কম লক্ষ্য করা গেছে।
বিহারে আসা পূণ্যার্থীরা জানিয়েছেন, জঙ্গি হামলার অশঙ্কায় লোকজন কিছুটা কম। তারপরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক নিরাপত্তার কারণে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানটি শেষ করতে পেরেছি। বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্ব যাতে জঙ্গিবাদমুক্ত হয় সেই প্রার্থনা করা হয়।
রাঙামাটি রাজবন বিহারের ইন্দ্র দত্ত মহাস্থবীর বলেন, ‘তথাগত ভগবান মহামতি গৌতম বুদ্ধের ত্রিস্মৃতি বিজরিত এই পূর্ণিমা তিথি বৌদ্ধদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যবহ। এদিন মহামানব গৌতম বুদ্ধ জন্ম, বুদ্ধত্ব ও মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন। এই তিনটা ঘটনার মাধ্যমে আমরা এই শিক্ষা পেতে পারি এই পৃথিবীতে একজন মহাপুরুষের আবির্ভাব প্রয়োজন, ওনার জ্ঞান লাভ করার জন্য সাধনা প্রয়োজন, পৃথিবীতে যতই মহাপুরুষ হন না কেন ওনাকে একদিন মৃত্যু বরণ করতে হবে।’