ইউপি সচিবকে পিটিয়ে জখম, দুই মেম্বার বরখাস্ত

বরিশালবরিশালের গৌরনদী উপজেলার চাঁদশী ইউনিয়ন পরিষদের অফিস কক্ষে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব সাধন চন্দ্র হালদারকে পেটানোর ঘটনায় দুই মেম্বারকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনার সাত মাস পর স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মো. ইফতেখার আহম্মেদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বরখাস্তের আদেশ সোমবার দুপুরে গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দফতরে পৌঁছে। তাদের বরখাস্তের চিঠি প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইউএনও।

যাদের বরখাস্ত করা হয়েছে তারা হলেন- উপজেলার চাঁদশী ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য সৈয়দ মেহেদী হাসান এবং ২নং ওয়ার্ডের সদস্য ও ২নং ওযার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিলিপ কুমার ভদ্র।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সৈয়দ মেহেদী হাসান স্থানীয় সরকার অধিদফতরের এলজিএসপি প্রকল্পের অধীনে উত্তর নাঠৈ মঙ্গল সরদারের বাড়ি থেকে খালেক মোল্লার বাড়ি পর্যন্ত ইটের সলিং সড়ক নির্মাণের কাজ পান। আর দিলিপ কুমার ভদ্র উত্তর চাঁদশী রাধাকান্ত মেম্বারের বাড়ির সামনে ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ পান। মেহদী হাসান ও দিলীপ কুমার ভদ্র প্রকল্পের কাজ না করে বিলের চেক দাবি করেন। কিন্তু এলজিএসপির নীতিমালা অনুসারে সচিব সাধন চন্দ্র হালদার বিল দিতে রাজি না হওয়ায় গত ২৪ অক্টোবর দুপুরে ইউপি সদস্য সৈয়দ মেহেদী হাসান ও দিলিপ কুমার ভদ্র সচিব সাধন চন্দ্র হালদারকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেন।

পরের দিন (২৫ অক্টোবর) সচিব সাধন চন্দ্র হালদার বাদী হয়ে ইউপি সদস্য সৈয়দ মেহেদী ও দিলীপ কুমার ভদ্রকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলায় পুলিশ দুই মেম্বারকে গ্রেফতার করে। বর্তমানে তারা জামিনে রয়েছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গত মার্চ মাসে দুই ইউপি সদস্যকে অভিযুক্ত করে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

এ ব্যাপারে চাঁদশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কৃঞ্চ কান্ত দে বলেন, ‘দুই সদস্যকে বরখাস্ত করার বিষয়টি শুনেছি। এখনও কোনও কপি হাতে পাইনি।’ ইউপি সদস্য সৈয়দ মেহেদী হাসান ও দিলিপ কুমার ভদ্র জানান, অভিযোগের কোনও সত্যতা নেই। বরখাস্তের বিষয়টি তারা জানেন না। 

গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খালেদা নাসরিন দুই ইউপি সদস্য বরখাস্ত হওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মো. ইফতেখার আহম্মেদ চৌধুরীর স্বাক্ষরিত আদেশ সোমবার হাতে পেয়েছি। প্রজ্ঞাপন আদেশে বলা হয়, ইউপি সদস্যরা যে অপরাধমূলক কাজ করেছেন তা পরিষদসহ জনস্বার্থের পরিপন্থী। তাই ইউনিয়ন পরিষদ আইন, ২০০৯ এর ধারা ৩৪(১) অনুযায়ী উল্লেখিত ইউপি সদস্যদের নিজ নিজ পদ থেকে বরখাস্ত করা হলো।’