ট্রেনে কাটা পড়ে ভিক্ষুকের মৃত্যু, থলেতে মিললো ৮০ হাজার টাকা

ট্রেনে-কাটা-পড়ে-মৃত্যুভিক্ষুক খোকা মোল্লা (৬৫) তার ভিক্ষার থলে (ব্যাগ) কখনও স্ত্রী ও সন্তানদের দেখতে দিতেন না। বগুড়া শহরের বিভিন্ন এলাকায় দিনভর ভিক্ষা করে রাতে বাড়ি ফিরতেন। ভিক্ষা করে পাওয়া টাকাপয়সা ওই থলেতেই রেখে দিতেন। রাতে ঘুমানোর সময়ও থলেটি মাথার কাছে থাকতো। অবশেষে ওই থলে রক্ষা করতে গিয়েই ট্রেনে কাটা পড়ে তার মৃত্যু হলো। ওই থলেতে ছিল ভিক্ষা করে পাওয়া ৮০ হাজার ১৯০ টাকা।

বুধবার (২২ মে) সকালে বগুড়ার গাবতলী উপজেলার সুখানপুকুর স্টেশনে এ ঘটনা ঘটেছে।

বগুড়া রেল স্টেশন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) কায়কোবাদ ও স্বজনরা বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, গাবতলী উপজেলার নেপালতলি ইউনিয়নের ধনঞ্জয় গ্রামের মৃত মনি মোল্লার ছেলে খোকা মোল্লা দীর্ঘ ২৫ বছর যাবৎ ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়ে তার ভিক্ষার ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। ভিক্ষুক খোকা সব সময় একটি চটের থলে রাখতেন। সকালের ট্রেনে বগুড়া শহরে এসে দিনভর ভিক্ষা করতেন। এরপর বিকালের ট্রেনে বাড়ি ফিরতেন।

বুধবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে তিনি সুখানপুকুর স্টেশনে বগুড়াগামী কলেজ ট্রেনের দুই বগির সংযোগস্থলে উঠে বসেন। এ সময় ভিক্ষার থলেটি তার কাঁধে ছিল। ট্রেন প্লাটফরম ছাড়ার সময় ঝাঁকুনিতে থলেটি নিচে পড়ে যায়। থলেটি উদ্ধারে খোকা মোল্লাও লাফ দেন। এতে ট্রেনের চাকায় কেটে তার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। পরে ওই থলেতে ভিক্ষার ৮০ হাজার ১৯০ টাকা পাওয়া গেছে। এ টাকা তার স্ত্রী ও সন্তানদের দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার লাশ গ্রামের গোরস্থানে দাফন করা হয়।

গাবতলী উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবুল কালাম আজাদ বাদল বলেন, ‘থলেতে থাকা নোট ও মুদ্রা গুনতে প্রায় তিন ঘণ্টা সময় লেগেছে।’

সুখানপুকুর রেল স্টেশন মাস্টার আবদুল মতিন জানান, ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের উপস্থিতিতে ওই টাকা তার পরিবারকে দেওয়া হয়েছে।