এই ঘটনায় নকলা থানায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতারকৃত আসামি নাসিমা আক্তারকে (৩৯) পাঁচ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করে বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়। বিচারিক হাকিম শরীফুল ইসলাম খান আগামী রবিবার (১৬ জুন) রিমান্ড শুনানির তারিখ ধার্য করে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তবে মামলার অন্য আসামিরা পলাতক রয়েছেন।
এদিকে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ময়মনসিংহ রেঞ্জের পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ড. আক্কাছ উদ্দিন ভুঁইয়া। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) বিকালে তিনি নকলা শহরের কায়দা এলাকার ওই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি নির্যাতিতা গৃহবধূ ও তার স্বামীসহ স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। একই সঙ্গে তিনি এই ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন এবং এজাহারনামীয় আসামিদের বাইরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কারও মদত থাকলে তাদেরকেও দ্রুত আইনের আওতায় আনার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন। এছাড়া দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান তিনি।
পরে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুতর অবস্থায় ডলি খানমকে উদ্ধার এবং ঘটনায় জড়িত আবু সালেহ ও তার ছোট ভাই বউ লাখী আক্তারকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু চিকিৎসার কথা বলে ডলি খানমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানোর পর প্রভাবশালীদের তদবিরে ছাড়া পেয়ে যান আটক দুজন। অন্যদিকে বর্বর নির্যাতনে ডলি খানমের রক্তক্ষরণ শুরু হয়। তাকে ১৬ মে পর্যন্ত সাত দিন চিকিৎসা দেওয়ার পরও তার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় জেলা হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানেও ২২ মে পর্যন্ত সাত দিন চলে তার চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেখা যায়, নির্যাতনের কারণে ডলি খানমের অকাল গর্ভপাত হয়েছে। এ ঘটনায় গত ৩ জুন শফিউল্লাহ শেরপুরের আমলি আদালতে আবু সালেহসহ পাঁচজনকে স্বনামে ও আরও অজ্ঞাত ৫-৭ জনকে আসামি করে একটি নালিশি মামলা দায়ের করেন।
শফিউল্লাহ অভিযোগ করে জানান, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে তার বড়ভাই সেনাসদস্য নেছার উদ্দিনের ইন্ধনে তার স্ত্রী লাখী আক্তার এবং অন্য দুই ভাই আবু সালেহ ও সলিমউল্লাহসহ তাদের ভাড়াটে লোকজন তার অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রীকে বর্বরোচিত নির্যাতন চালিয়ে গর্ভের সন্তান নষ্ট করে দিয়েছে।
একমাস পর ১০ জুন এ ঘটনার ভিডিও প্রকাশ হলে তোলপাড় শুরু হয়। পরে শেরপুরের পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীমের নির্দেশে ১১ জুন নকলা থানায় নয়জনের নামে মামলা হয়। অভিযান চালিয়ে পুলিশ নাসিমা আক্তার নামে একজনকে গ্রেফতার করে।