যশোরে পৌরসভার জমিতে উচ্ছেদ অভিযানকালে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ৩

যশোরে পৌরসভার জায়গায় উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে দোকানদারদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ঘটে।

যশোরে পৌরসভার মালিকানাধীন জায়গায় নতুন স্থাপনা নির্মাণের জন্য বিদ্যমান শতাধিক টংঘর ভাঙার অভিযান চলাকালে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সংঘর্ষে পুলিশসহ তিনজন আহত হয়েছেন।

শনিবার (১৫ জুন) শহরের আরএন রোড এলাকার পুরাতন বাজারে এ ঘটনা ঘটেছে। এসময় তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। 

পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার কামাল আহমেদ জানান, শহরের আরএন রোড এলাকার নতুন বাজারে যশোর পৌরসভার মালিকাধীন প্রায় ১১০টি ঘর রয়েছে। সেখানে পার্টস ব্যবসায়, হোটেল, মুদি ব্যবসায়সহ কাঁচাবাজারের টং দোকান ছিল। পৌরকর্তৃপক্ষ নতুন স্থাপনা করার জন্য আজ শনিবার বেলা ১১টা থেকে নতুন বাজারে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে। এর আগে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদসংক্রান্ত চার দফা নোটিশ দেওয়া হয়।

অভিযান চলাকালে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিকদের একটি অংশ পৌর কর্মচারী ও পুলিশের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় রিগান নামে একজন পুলিশ সদস্য, পৌর কর্মচারী আক্তারসহ তিনজন আহত হন। ওইসময় পৌরসভার দুটি গাড়ির গ্লাসসহ তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে দাবি করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ।

তবে, বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোস্তফা কামাল ফারুক লিটন সংঘর্ষের কথা অস্বীকার করে বলেন, সামান্য ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে কেউ আহত হননি।

নতুন বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোস্তফা কামাল ফারুক লিটন এ প্রতিনিধিকে বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি পৌরমেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টুর সঙ্গে গতকাল (১৪ জুন) কথা বলেছি। তার কাছে সময় চেয়েছিলাম; মৌখিকভাবে তিনি তা মঞ্জুরও করেন। কিন্তু কোনও নোটিশ ছাড়াই আজকে এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হলো। এ কারণে পৌরকর্তৃপক্ষকে নিয়মিত ঘরভাড়া দেওয়া এখানকার ৩১ জন এবং টোল দেওয়া প্রায় ৮০জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অনেকের মালামাল সরানোও সম্ভব হয়নি।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানে হামলার কোনও ঘটনা ঘটেনি। উচ্ছেদ চলাকালে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পৌর কর্মচারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। তবে, কেউ আহত হননি।

জানতে চাইলে যশোর পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সন্তোষ দত্ত বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ সংক্রান্ত নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আজ অভিযান পরিচালনা করা হয়। আমি শুনেছি, অভিযান চলাকালে পৌরসভার দুটি গাড়ির গ্লাস ভাঙচুর করা হয়েছে।’

যশোর কোতোয়ালি থানার এসআই মাহবুব আলম এ প্রতিনিধিকে বলেন, ‘লিটন নামে এক ভাড়াটের ঘর ভাঙার সময় তার নেতৃত্বে কয়েকজন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনাকারীদের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। সেইসময় পুলিশের নায়েক রিগান আহত হন। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।’

যশোর পৌরসভার মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টুকে কয়েক দফা ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। পরে তাকে এসএমএস করা হলে তার জবাবও দেননি।

তবে, প্যানেল মেয়র-১ মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আজকের এই উচ্ছেদ অভিযান সম্পর্কে আমি জ্ঞাত নই।’