বরিশালে ডিসি লেকের পানিতে দূষণ, ভেসে উঠছে বড় বড় মাছ

বরিশাল ডিসি লেকে ভেসে ওঠা মাছ তুলে নিয়ে যাচ্ছেন পথচারীরাবরিশাল নগরীর রাজা বাহাদুর সড়কে ডিসির বাসভবনের বিপরীত পাশের ডিসি লেকে ভেসে উঠছে বিভিন্ন প্রজাতির বড় বড় মাছ। লেকের পানি দূষিত হওয়ায় গত দুই দিন ধরে বড় মাছ মরে ভেসে উঠছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় ও পথচারীরা ভেসে ওঠা মাছ তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যে স্থানীয় এক যুবক প্রায় ২০ কেজি ওজনের একটি কাতলা মাছ লেক থেকে তুলে নিয়ে যান।

জেলা প্রশাসকের মালিকানাধীন এবং তত্ত্বাবধানে থাকায় এই লেকটি ডিসি লেক হিসেবে পরিচিত। স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ডিসি লেকের পানি পঁচে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ওই লেকের মাছসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণী মরে কিংবা অর্ধমৃত অবস্থায় ভেসে উঠছে। এছাড়া নগরীর অন্যতম বিনোদন এলাকাখ্যাত ডিসি লেকের পাড়ে এবং সংলগ্ন গ্রিন সিটি পার্ক এবং বঙ্গবন্ধু উদ্যানে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীরা দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেন। একদিকে লেকের পচা পানি, তার মধ্যে মৃত মাছ পচে দুর্গন্ধ আরও তীব্র হয়েছে। লেকটির পাশেই জেলা প্রশাসকসহ বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের সরকারি বাসভবন রয়েছে।

বরিশাল পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আরেফিন বাদল জানান, ‘ডিসি লেকের পানি নষ্ট হওয়ার বিষয়ে আমাদের কেউ অবহিত করেননি। তবে সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি। বিশেষজ্ঞ দল পাঠিয়ে লেকের পানি পরীক্ষার করার পর পানি পচে যাওয়া বা মাছ মরে যাওয়ার রহস্য উদঘাটন করতে পারবো।’

বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নাজির হাবিবুর রহমান জানান, ‘লেকের পানি নষ্ট হওয়ায় প্রায় দেড় মাস আগে মৎস্য বিভাগের পরামর্শে পানি শোধনের জন্য ১০ মণ চুন ফেলা হয়েছিল। এতে পানি শোধন না হয়ে আরও বিষাক্ত হয়েছে। এ কারণে মাছ মরে ভেসে উঠছে। মাছ মরে যাওয়ার খবর পেয়ে মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা লেক পরিদর্শন করেন। তারা পানি শোধনের জন্য নতুন করে ওষুধ প্রয়োগ করেছেন।’

জেলা মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস জানান, ‘আমি নিজেই ডিসি লেকের পানি পরীক্ষা করেছি। সর্বশেষ গত রবিবার (১৬ জুন) লেকের পানি শোধনের জন্য ১০ হাজার টাকা মূল্যের ২শ’ কেজি জিওলাইক ওষুধ পানিতে দেওয়া হয়েছে। ওষুধ পানির সঙ্গে মিশে গেলে মাছ মরা বন্ধ হবে। তবে এই ওষুধ প্রয়োগের পরে বৃষ্টি হওয়া জরুরি। কেননা বৃষ্টি ছাড়া ওষুধ পানির সঙ্গে মিশবে না। তবে বৃষ্টি না হওয়ায় পাম্পের মাধ্যমে লেকে নতুন পানি দেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।’