মঙ্গলবার (১৮ জুন) রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) পক্ষ থেকে শাহবাজপুর সেতু দিয়ে যান চলাচল বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম আল মামুন জানান, ‘মঙ্গলবার বিকালে ক্ষতিগ্রস্ত সেতুর চতুর্থ স্প্যানের ফুটপাতসহ রেলিং ভেঙে পড়ে। তবে এক পাশ দিয়ে গাড়ি চালানো যেত। কিন্তু সেতুর অবস্থা ভালো না হওয়ায় যে কোনও মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকায় সেতু দিয়ে সব ধরণের ভারী ও মাঝারি যান চলাচল বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিকল্প পথ হিসেবে আপাতত ঢাকা থেকে সিলেটগামী যানবাহনগুলোকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল-নাসিরনগর ও হবিগঞ্জের লাখাই-হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক ব্যবহার করার জন্য বলা হয়েছে। একইভাবে সিলেট থেকে ঢাকাগামী যানবাহনগুলোকে বিজয়নগরের চান্দুরা হয়ে আখাউড়া এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা হয়ে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। তবে জরুরি প্রয়োজনে প্রাইভেটকার মাইক্রোবাসকে সেতুটির একপাশ দিয়ে যেতে বলা হয়েছে।’
এদিকে সেতুটি বন্ধের কারণে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে চলাচলকারী যানবাহন এবং যাত্রীরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। ঢাকা থেকে সিলেটগামী শ্যামলী পরিবহনের যাত্রী মো. মোমেন মিয়া জানান, ‘সকাল ৬টার দিকে ঢাকা থেকে সিলেট যাওয়ার জন্য বাসে উঠি। তবে সেতু ভাঙার বিষয়টি জানতাম না। তীব্র যানজট উপেক্ষা করে দুপুর ১২টার দিকে শাহবাজপুর সেতু এলাকায় আসি। এখন আবার বিকল্প পথে যেতে হবে শুনলাম।’
একই কথা জানান সিলেট থেকে ঢাকাগামী মামুন পরিবহনের যাত্রী ফরিদ মিয়া। তিনি বলেন, ‘সকাল ৭টায় সিলেট থেকে বাসে উঠি ঢাকা যাওয়ার জন্য। পরে জানতে পারি মহাসড়কের এই ব্রিজটি ভাঙা। এখন পরিবার নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছি।’
সিলেটগামী কাভার্ড ভ্যানচালক সাজু খান বলেন, ‘এমন অবস্থায় পড়েছি বলার মতো না। সবদিকেই যানজট। কী করবো, কখন সিলেট পৌঁছাতে পারবো বুঝতে পারছি না।’
এদিকে আঞ্চলিক সড়কে যানবাহন চলাচলের কারণে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্বরোড এবং চান্দুরা এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্বরোড হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হোসেন সরকার জানান, ‘হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে যানজট নিরসনের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা। কোথাও যেন যানবাহন আটকা না পড়ে সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।’
সড়ক বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৬৩ সালে ২০৩ মিটার দীর্ঘ এ সেতুটি তিতাস নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত সেতুটি মেরামতে অন্তত ১০ দিন সময় লাগবে।
এছাড়া পাশে নির্মাণাধীন ২১৯ মিটার দীর্ঘ তিতাস নদীর ওপর দ্বিতীয় শাহবাজপুর সেতুটি চলতি বছরের জুলাই মাসের শেষ নাগাদ খুলে দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুন- শাহবাজপুর সেতু ভেঙে যাওয়ায় বিকল্প সড়ক ব্যবহারের পরামর্শ